পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਲ o কোথায় ? বিড়াল বাধা হয় নাই ? কিসের অধিবাস ? সমস্তই অঙ্গহীন। বিদ্যাল বোলাও!” । । . সাগরলালের জানা হইয়াছিল, বিড়াল বাধা পুনঃপ্রশ্নটা প্রধান অঙ্গ। বিড়াল কুঁধা হয় নাই, সেই জন্যই তিনি বলিলেন, সমস্তই অঙ্গহীন ; সেই জন্যই বিড়াল ভালব হইল। বাড়ীর প্রধান সরকার হরেকৃষ্ণ বাগচী সম্মুখে আসিয়া খলিল, “আজে, সে বিড়ালটা মরিয়া গিয়াছে।” বাবু সক্রোধে বলিলেন, "মরিয়া গিয়াছে, দেশে কি আর বিড়াল পাওয়া যায় না ? যেখানে পাও, শীঘ্র একটা বিড়াল ধরিয়া আন, অধিবাস এখন বন্ধ থাকুক।” পুরোহিত হাত গুটািইলেন, হরেকৃষ্ণ বিড়াল অন্বেষণে চুটিল ; পাড়া হইতে একজনের একটা কালো বিড়াল ধরিয়া আনিয়া লম্বা দড়ী দিয়া দালানের একটা থামে বধিয়া দিল। সাগরলাল সন্তুষ্ট হইলেন, অধিবাস করিবার হুকুম দিলেন। অধিবাসের সময় বাড়ীর কৰ্ত্তাকে উপস্থিত থাকিতে হয়, সাগরলালের সময়াভাব, তিনি উপস্থিত থাকিতে পারিলেন না, বৈঠকখানায় ইয়ারের আঁহার অপেক্ষা করিতেছিল, তিনি তাড়াতাড়ি মদ খাইতে চলিলেন। : - ফ্যাসনের অনুরোধে, বাহ্য-শোঁতার অনুরোধে, তামাসার অনুরোধে দুর্গাপূজা এখন বিকৃতভােব ধারণ করিয়াছে। কি সহর, কি পল্লীগ্রাম, সকল স্থলেই মা দুৰ্গা কেবল তামাস দেখিয়া বিদায় হন। দু-এক বাড়ীতে শাস্ত্ৰমত পূজা হয়, ব্ৰাহ্মণ-ভোজনাদিও হয়, এ কথা না বলিলে সত্যের মানরক্ষা হয় না, সৌজন্য বলিতে হইল; নতুবা দুৰ্গা-বাড়ীর কৰ্ত্তাপক্ষগণের ইচ্ছানুসারে পুজা-পদ্ধতি উল্টাইয়া যাইতেছে, এই কথা বলাই হ্যায়সঙ্গত। কলিকাতা সহরের যে যে বাড়ীতে । আনন্দময়ীর অধিষ্ঠান হয়, সেই সকল বাড়ীতে আনন্দ থাকে না, এ কথা বলাও একপ্রকার সত্যের অপলাপ। আনন্দ অবশ্যই থাকে, কিন্তু দুর্গানন্দ আর ভোগানন্দ অনেকটা অন্তর। বাবুদের ভোগবিলাসে দুর্গাপূজা সমাপ্ত করা যদি যথার্থই দুর্গোৎসব নামে অভিহিত হইতে পারে, তাহা হইলে তাদৃশ । দুর্গোৎসব এ দেশ হইতে উঠিয়া যাওয়াই মঙ্গল। সত্যের অনুরোধে আর একটী কথা এখানে বলিতে হইল। নবদ্বীপের তারকচন্দ্র প্রামাণিক কলিকাতা ফ্ৰাসায়ী পাড়ায় প্রকৃত সাত্বিকভাবে দুর্গাপূজা করিতেন। এখনকার দুর্গাপূজা কত স্থানে