পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইংরাজী আইনের মর্শ এইরূপ যে, দেনার দায়ে দেনাদার কয়েদ হইলে মহাজনগণকে তাহার "ারাকী যোগাইতে হয়। একটা দেউলে লোককে কয়ে রাখি , । বেশী দিন খোরাকী দেওয়া কাহারও ইচ্ছা নহে, তবে আসামীকে জব্দ করিবার ম - ল ব থাকিলে কেহ কেহ কিছুদিন আইনমত খোরাকী দিয়া থাকেন। ধে চারামের সহিত কোন মহাজনের তাদৃশ শক্ৰতা ছিল না, পক্ষান্তরে টাকা কৰ্জ দিবার সময় তাহদের অনেকেই অনেক লাভ করিয়াছিলেন , র্যাহার। যাহা ক্ষ, ত হইল, ভঁাহার আর পূরণ হইবার সম্ভাবনা ছিল না ; সুতরাং তঁাহারা অল্প দিন খোরাকী যোগ ইয়া হাত গুটািইয়া লইলেন, বেচারাম খালাস পাইলেন। সকলেই জানিল, বেচারাম একটা জুয়াচাের, বহুরূপী, বদমাস। বেচারামটা জুয়াচাের, কেবল এই কথা প্ৰকাশ পাইল, এমন নহে, নাম ভাড়াইয়া, জাতি ভাড়াইয়া, কলিকাতায় আসিয়া বাবু হইয়াছিল, জমীদার সাজিয়াছিল, সমস্তই ভুয়াকাণ্ড, ইহাও প্রকাশ হইল। জানবাজারের যে বাড়ীতে বেচারাম বাস করিত, সেই বাড়ীর অধিকারী এক বৎসর ভাড়া পান নাই। বেচারাম কয়েদ হইবার পর বাড়ীওয়ালা সেই বাড়ীর ঘরগুলি অন্বেষণ করিয়া যাহা যাতে পাইয়াছিলেন, তাহ শ্ৰবণ করিলে অনেক দেউলে বাবুর কা গুকারখানা মনে পড়ে। বেচারামের বাবুয়ানার আসন্নকাল বুঝিতে পারিয়া তাহার মোসাহেবেরা এক রাত্রে বাটীর সমস্ত মূল্যবান আসবাবপত্র সরাইয়া ফেলিয়াছিল, বাকী ছিল কেবল পাঁচগাছ বেতের ছড়ি, এক জোড়া ছেড়া মাদুর, একখানা ছোড়া সতরঞ্চি, এক ডজন ছোড়া মোজা আর পঞ্চাশটা মদের বোতল। বোতলের পূর্ণগর্ভ ছিল না, খালি বোতল, ইহাও সকলে বুঝিয়া লইবেন।

ৰাষ্ট্ৰী ওয়ালা যে দিন বাড়ী তল্লাস করেন, সেই দিন হইতে ক্ৰমাগত এক পক্ষকাল দলে দলে পাওনাদার আসিয়া জড় হইয়াছিল। পোষাকওয়ালা, দরজী তিন হাজার, টাকা, সোণারূপার বাসনওয়ালা, ঘড়ীওয়ালা, চেইনওয়ালা এক হাজার নয়শত টাকা, শালওয়ালা পাঁচ হাজার পঞ্চাশ টাকা, মুদিখানাওয়ালা ছয়শত যাট টাকা, বেলফুলওয়ালা আশী টাকা, আতর-গোলাপওয়ালা তিনশত পচিশ টাকা, গাধার দুধওয়ালা একশত বাইশ টাকা, চীনাবাজারের জুতাওয়াল হই শত কুড়ি টাকা, গাভীহুঙ্কওয়ালা গোস্বালা তিনশত বত্ৰিশ টকা,