পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R R दझ प्रश्g । ব্যক্তি লেখা-পড়া শিখিয়াও প্রকৃতির মহিমা রক্ষা করিতে শিখে নাই, কৌতুক করিয়া নব নব পল্লব গুলি ছিল কান্নয়া ফেলিল, এরূপ প্ৰকৃতি যাহার, সে কখনই, কোমলাঙ্গী সুন্দরী বালিকার যত্ন জানিবে না, আদর জানিবে না, কষ্ট বুঝিবে না। কোন ক্রমেই আমি তাহাকে কন্যাদান করিব না। প্ৰকৃতি-ভাব-বিমুগ্ধ সৎকবি সেই জমীদার মহাশয়ের মনে তৎকালে এইরূপ ভাবোদয় হইয়াছিল, গৃহিণীর নিকটে তিনি সেই মনোভাব ব্যক্তি করিলেন। তাদৃশ অরসজ্ঞ, শুদ্ধ হৃদয় যুৱকহস্তে কুসুমকলিকা-স্বরূপ কন্যা কদাচ্য তিনি অৰ্পণ করিবেন না, ইহাই তাঁহায় সঙ্কল্প, গৃহিণী তাহা বুঝলেন। ধন্যবানের পুত্র জামাতা হইবে, কন্যাটা সুখে থাকবে, অপরাপর বিষয়েও সুখ হইৰে, গৃহিণীর মনে সেইরূপ আশার সঞ্চায় হইয়াছিল ; স্বামীর ঔদাস্ত দর্শনে, উদাসবােক্য শ্ৰবণে, সে আশা বিফল হয় দেখিয়া স্বামীকে তিনি অনেক বুঝাইলেন, কিন্তু স্বামীয় মন ফিরাইতে পারলেন মা। ধন্যবানের রূপবান ও বিদ্যাবান পুত্রকে কন্যাদান করিতে কি কারণে তঁহার অসম্মতি, শেষকালে সেই কারণটাও তিনি আপনি সহধৰ্ম্মিণীকে বুঝাইয়া দিলেন, গৃহিনী হাত করিয়া মাথা হেঁট করিলেন। ঘরের পিতার যথেষ্ট ধন-সম্পত্তি আছে, অট্টালিকা আছে, ধর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটী তিনটী উচ্চ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছে, এই পৰ্যন্ত জানিতে পারিলেই কন্যায় শিতা আজকাল যথেষ্ট বিবেচনা করেন, স্বরের বংশ অথবা প্ৰকৃতিগত অন্য কোন গুণের প্রতি তাদৃশ দৃষ্টি থাকে না। প্ৰস্তাবিত জমীদার মহাশয় স্বভাবের উপদেশে উক্ত পাত্রের নিষ্ঠুরতা ও অরসজ্ঞতার পরিচয় প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, তজন্যই বিবাহ রহিত হইল। ততদূর সূক্ষ্মদৃষ্টি প্রায় কাহারো নাই, সেই কারণে পাশকরা বর হইলেই অবাধে পাশ হইয়া ৰায়। একবার একজন ভট্টাচাৰ্য, আমাদিগকে বলিয়াছিলেন, কলিকাতায় যখন বিশ্ববিদ্যালয় নূতন হয়, সেই সময় দুই এক সহস্র ছাত্র উত্তীর্ণ হইতে থাকে, ক্ৰমশঃ বৃদ্ধি-প্রাপ্ত, এখন সহস্ৰ সহস্ৰ লক্ষ লক্ষ ছাত্র বর্ষে বর্ষে উত্তীর্ণ হইতেছে। র্যাহাদের ভাগ্য ভাল, তাহারা বিদ্যার মৰ্য্যালানুসারে পদ প্ৰাপ্ত হইতেছেন। সাধারণ স্থল আমি ( ভট্টাচাৰ্য মহাশয় ।) দেখিতেছি, সুবিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তীর্ণ ছাত্রেরা কেবল সেই সুপারিসেই। এ দেশের কন্যাগণের পিতৃপুরুষের সৰ্ব্বনাশসাধনের হেতুভূত। মাতাপিতার পরমহলাদ, পরীক্ষা-নুপারিসে বিবাহবাজারে পুত্রকন্যার মূল্যবৃদ্ধি হইতেছে।