বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদারনাথ দাস পাশ্চাত্য শিক্ষাপদ্ধতিতে চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষালাভের পর যে সকল বাঙালি মনীষী তাহদের অপুর্ব প্রতিভা প্ৰকাশ করিয়া এ দেশবাসীদিগকে ধন্য করিয়া গিয়াছেন, পরলোকগত খ্যাতনামা চিকিৎসক স্যার কেদারনাথ দাস। তঁহাদের অন্যতম। স্যার কেদারনাথের মত স্ত্রীরোগ-চিকিৎসক এ যুগে অতি অল্পই দৃষ্ট হইয়া থাকে। তিনি যে ভবিষ্যতে একজন কেদারনাথের পিতা যাদবকুমার দাস* একজন শিক্ষাজীবী ছিলেন। কেদারনাথ যাদবকুমারের দ্বিতীয় পুত্র। ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি ২ মাসে। তঁহার জন্ম হয়। ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি হেয়ার স্কুল হইতে ম্যাট্রিকুলেশন ও ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা প্রেসিডেন্সি গিয়াছিলেন। তঁহার পূর্বে র্তাহার ন্যায় মেধাবী ছাত্র আর কেহ মেডিকেল কলেজে পড়িয়াছেন বলিয়া জানা যায় না। মেডিকেল কলেজে শিক্ষালাভের সময় তিনি অনেক মেডেল, পুরস্কার ও বৃত্তি লাভ করিয়াছিলেন। ঐ সময়ের মধ্যে তিনি আটটি সুবর্ণপদক ও দশ খানি প্রশংসাপত্র লাভ করেন। ধাত্রীবিদ্যা, অস্ত্রবিদ্যা ও শারীর-বিদ্যা-তিনটি বিষয়েই তিনি সকল পরীক্ষাতে প্ৰথম স্থান অধিকার করিতেন। পাঁচ বৎসর তিনি কলেজবৃত্তি ভোগ করিয়াছিলেন। তিনি দুর্গাচরণ লাহা’-বৃত্তি ও আবদুল গনি-বৃত্তিও লাভ করেন। ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে তিনি এম. বি পরীক্ষা পাশ করেন। ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এম. ডি পরীক্ষা দিতে গিয়াছিলেন, কিন্তু তখনকার আইনে গ্রাজুয়েট ভিন্ন অপর কাহাকেও এম. ডি পরীক্ষা দিতে দেওয়া হইত না; সেজন্য কেদারনাথকে মাদ্ৰাজে যাইয়া এম. ডি পরীক্ষা দিতে হইয়াছিল। এম. বি. পাশ করার পরই চিকিৎসাবিদ্যায় তাহার অপূর্ব কৃতিত্ব দেখিয়া কলকাতা মেডিকেল কলেজের কর্তৃপক্ষ র্তাহাকে কলেজে একটি চাকরি দেন। তখন কোনাে ভারতীয়কে মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক পদে নিয়োগ করা হইত না। সেজন্য কেদারনাথের জন্য কলেজের রেজিস্ট্রর পদ সৃষ্টি করিয়া তীহাকে ঐ পদে নিযুক্ত করা হইয়াছিল। ১৮৯২ খ্রিস্টােব্দ হইতে ১৮৯৯ খ্রিস্টােব্দ পর্যন্ত তিনি কলিকাতা মেডিকেল কলেজে রেজিস্ট্রারের কার্য করিবার পর পাঁচ বৎসরের জন্য কলিকতা ক্যাম্বেল মেডিকেল স্কুল ও হাসপাতালের শিক্ষক ও স্ত্রীরোগচিকিৎসক নিযুক্ত হইয়াছিলেন। সুদীর্ঘ কুড়ি বৎসর কােল তঁহাকে ঐ একই পদে নিযুক্ত থাকিতে হয়। হাসপাতালের সহিত সংশ্লিষ্ট থাকিলে গবেষণা সুবিধা হইবে বলিয়া তিনিও কার্যত্যাগ করেন নাই। ঐ সময়ের মধ্যে তঁহার সুচিকিৎসার খ্যাতি চারিদিকে