বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

টীকা ও প্রাসঙ্গিক তথ্য Sbro কাজে নিযুক্ত হয়ে আপন বুদ্ধি ও কর্মদক্ষতায় সম্পাদকের পদ লাভ করেন। হিন্দু কলেজের অধ্যক্ষ, সংস্কৃত কলেজের সেক্রেটারি প্রভৃতি নানা সম্মানিত পদ অলংকৃত করেন। তঁর সংকলিত ইংরেজি বাংলা অভিধান’ এদেশের মানুষের দ্বারা সম্পাদিত প্ৰথম অভিধান। তঁর ঔষধসার” (১৮১৬), ‘নীতিকথা” (১৮১৮), হিতোপদেশ (১৮২০) তাকে খ্যাতি এনে দিয়েছিল। ব্ৰহ্মানন্দ কেশবচন্দ্ৰ সেন তার পৌত্র ছিলেন। ২. প্যারীমোহন সেন : রামকমল সেনের চারপুত্রের মধ্যে প্যারীমোহন দ্বিতীয়। তিনিও পিতার ন্যায় ট্যাকশালের দেওয়ান ছিলেন। পিতার মতই তিনি ধর্মপরায়ণ ও বদ্যান্য ছিলেন। পরম বৈষ্ণবসুলভ গুণগুলি ছিল তার মধ্যে। গোপনে তিনি বহু গরিবদুঃখীকে সাহায্য করতেন। তার হৃদয় ছিল অত্যন্ত কোমল ও দয়াদ্র। ৩. এলবাৰ্ট হল বা অ্যালবার্ট হল : ব্ৰহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র সেনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান অ্যালবার্ট হল। এটিকে অ্যালবার্ট ইনস্টিটিউট ও বলা হয়। মহারাণী ভিক্টোরিয়ার স্বামী প্রিন্স অ্যালবার্টের নাম অনুসারে এটির নামকরণ হয়। এই হলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল হিন্দু মুসলমান ও খ্রিস্টান সকল সম্প্রদায়ের মিলন ক্ষেত্র হিসেবে। কোনো বিশেষ ধর্ম বা রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠান। এটি ছিল না। তৎকালীন লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার রিচার্ড টেম্পল এই হলের দ্বারোদঘাটন করেন। দ্বারোদঘাটন কালে তিনি এই হল প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করেন। টেম্পলের বক্তৃতায় চারটি উদ্দেশ্য বিবৃত হয়েছে। (১) সঙ্গীত, জলসা ও নির্দোষ আমোদ প্রমোদ (২) সাহিত্য বিষয়ে বক্তৃতা ও বিতর্ক (৩) গ্রন্থাগার বা জনসাধারণের পঠনের ব্যবস্থা (৪) জনহিতকরী বিভিন্ন উদ্দেশ্যে সাধারণ সভা আহ্বান। বর্তমানে অ্যালবার্ট হলের অস্তিত্ব লুপ্ত। 8. DEBUTÈRE GG:ssass : (Goodwill Fraternity) : yra a T(33 kí cotR কেশবচন্দ্র ড. চামার (Chalmer) এবং থিয়োডের পার্কারের (Theodore parker) এর রচনাবলি পড়ে সেগুলি দ্বারা বিশেষ ভাবে প্রভাবিত হন। ঐ সময় তিনি তঁর আপনি বাড়িতে গুডউইল ফ্রেটারনিটি (Goodwill Fraternity) নামে একটি ক্ষুদ্র সভা বা সমাজ স্থাপন করেছিলেন। ঈশ্বর আমাদের পিতা আমরা পরস্পর ভাই। এইরকম একটি মত দ্বারা তিনি গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। উক্ত সভায় তিনি চামার ও পার্কারের রচনাবলি পড়ে শোনাতেন। কেশবচন্দ্রের অনুরোধে মহর্ষি দেবেন্দ্ৰনাথ ও দু-একবার ঐ সভায় সভাপতিত্বও করেছেন। ৫. ব্রিটিশ ইণ্ডিয়া সোসাইটি ; কেশবচন্দ্ৰ সেন প্ৰথম থেকে ছাত্রদের নৈতিক শিক্ষার উপরে জোর দিতেন। আমরা জানি ১৮৫২ সালের পূর্বে হিন্দু স্কুলে কেবল হিন্দু ছাত্ররাই লেখাপড়া করতে পারতো, কিন্তু ১৮৫২ সালের নভেম্বর মাস থেকেই এটি জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকলের জন্য দ্বার উন্মুক্ত হয়। পরে এটি এর প্রধান শিক্ষক প্যারীচরণ সরকারের উদ্যোগেই হেয়ার স্কুলে পরিণত হয়। স্কুলটি সব সম্প্রদায়ের ছাত্রের মিলনক্ষেত্র হয়ে দাঁড়ায়। কেশবচন্দ্র সেন যৌবনে সমবয়সী বন্ধুদের নিয়ে সভা সমিতির অনুষ্ঠান করতেন। এই স্কুলে ১৮৫৮ সাল নাগাদ তিনি ব্রিটিশ ইণ্ডিয়া সোসাইটি” নামে একটি সভা স্থাপন করেন। সাহিত্য, সংস্কৃতি ছাড়াও ধর্মবিষয়ক আলোচনাও এতে স্থান পেতো।