পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९3कमान बनioोंक्ष1ांश ݂ ݂ আইন অধ্যাপকের পদ লইয়া বহরমপুর কলেজে চলিয়া যান। বহরমপুর কলেজে র্তাহাকে দুই ঘণ্টা অধ্যাপনার কাজ করিতে হইত। সুতরাং অবশিষ্ট সময় আলস্য বিলাসে না। কাটাইয়া তিনি সেখানকার আদালতে ওকালতি আরম্ভ করেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই এই ব্যবসায়ে অসামান্য কৃতিত্ব দেখাইয়া তিনি প্রতিষ্ঠা ও সুনাম অর্জন করিয়াছিলেন। আইন কলেজেও তঁহার এই যশ অক্ষুন্ন ছিল। কলেজে যখন তিনি আইন পড়াইতেন, তখন র্তাহার বক্তৃতা এত ভাল হইতে যে কলেজের ছাত্র ছাড়াও বাহিরের বহু লোক তাহার বক্তৃতা শুনিতে যাইত। বিভাগীয় কমিশনার মিঃ ক্যাম্পবেল এবং নীলদর্পণের অনুবাদককে মিঃ লং সাহেবকেও * মাঝে মাঝে তঁহার আইনের ক্লাসে দেখা যাইত। ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে তিনি পুনরায় কলিকাতায় ফিরিয়া আসিয়া হাইকোর্টে যোগদান করেন। র্তাহার জ্ঞানার্জন-সম্পূহ এত বলবতী ছিল যে, ওকালতি ব্যবসায় আরম্ভ করিয়াও তিনি শিক্ষার্থী ছাত্রের মতই পড়াশুনা করিতেন। ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে আইনের সর্বোচ্চ পরীক্ষায় পাশ করিয়া তিনি ডি. এল উপাধি পাইয়াছিলেন। ইহার দুই বৎসর পরে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় “ঠাকুর-ল-লেকচারার’ রূপে র্তাহাকে আইনের অধ্যাপক নিযুক্ত করেন । গুরুদাস নির্লোভ ও ন্যায়নিষ্ঠ ছিলেন। একবার হাইকোর্টের একটি মোকদ্দমায় তাহার কোনো মক্কেল দৈনিক ৫০ টাকা পারিশ্রমিক দিয়া তঁহাকে উকিল নিযুক্ত করেন। নিযুক্ত হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বহরমপুরের কোনো মোকদ্দমার ভার গ্রহণের জন্য র্তাহার আহ্বান আসিল-পরিশ্রমিক দেড়হাজার টাকা। ৫০ টাকা পারিশ্রমিকের মামলাটি তিনি পূর্বে গ্রহণ করিয়াছিলেন বলিয়া দেড়হাজার টাকার প্রলোভন তিনি সংবরণ করিয়াছিলেন। পরদিন হাইকোর্টে গিয়া গুরুদাস শুনিতে পাইলেন, বহরমপুরের জজ গুরুদাসের অসুবিধার জন্য সেখানকার মামলাটি স্থগিত রাখিয়াছেন এবং সেখানে যাইয়া তাহার মামলা পরিচালনার সুবিধা না হওয়া পর্যন্ত উহা স্থগিতই থাকিবে। গুরুদাসের দায়িত্বজ্ঞান ও লোভশূন্যতা যে কত অধিক ছিল, তাহা এই ঘটনা হইতেই বুঝা যায়। ন্যায়নিষ্ঠা যে পরিণামে পুরস্কৃত হয়, এই ঘটনার ভিতর দিয়া তাহারও পরিচয় সুস্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে। ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে গুরুদাস বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার অন্যতম সদস্য নিযুক্ত হন। তারপর ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি হাইকোর্টের বিচারপতির পদ গ্রহণ করেন। গুরুদাস যোলো বৎসর কাল এই দায়িত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত ছিলেন। তঁহার ন্যায় আইনজ্ঞ, কর্তব্যনিষ্ঠ, স্বাধীনচেতা বিচারক অতি অল্পই দেখা যায়। তিনি নিজে যাহা সত্য বুঝিতেন, তাহা ব্যক্ত করিতে কখন ভীত বা বিচলিত হইতেন না। গুরুদাসের বিচার-বুদ্ধির উপর সে সময়কার প্রধান বিচারপতি স্যার ফ্রান্সিস ম্যাকলিনের এত গভীর শ্রদ্ধা ছিল যে, তঁহাকে সহযোগী না করিয়া তিনি কোনো জটিল মামলারই বিচার করিতেন না। গুরুদাসের জীবনে এবং চরিত্রে কর্ম-ভীরুতা এবং আলস্য কখন স্থান পায় নাই। বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত প্ৰতি কার্যে র্তাহার অদম্য উৎসাহের পরিচয় পাওয়া যাইত। তাহার কর্তব্যনিষ্ঠা এত প্ৰবল ছিল যে, পুত্র যতীন্দ্ৰচন্দ্ৰ যেদিন বিসূচিকা রোগে মরণাপন্ন কাতর