পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वाहन-*ाठूigएछ ዓ8 টেবিল থেকে গড়িয়ে যেসব ছোলা মেজেতে পড়ে গিয়েছিল-শেষে দেখা গেল সবাই তাও কুড়িয়ে কুড়িয়ে খাচ্ছি। সুবোধ বল্লে-আরও কিছু হোলে হোত দেখা যাচ্ছে । আমি বল্লাম-আমারও তাই মনে হচ্চে বটে ! আরও এক মাইল এগিয়ে গেলাম মোটরে । তারপর মোটর রেখে আমরা রাস্তার ডানদিকে একটা পাহাড়ের গা বেয়ে উঠতে লাগলুম। চারিদিকে গভীর বন, উঁচু শৈলমালা, একটা পাহাড়ী নদী পাহাড়ী রাস্তার নিচে দিয়ে বয়ে চলেচে । সামনের দিকে বন গভীরতর। খানিকদূর গিয়ে আমরা একটা নিচু উপত্যকার মধ্যে নােমলাম, আবার সেই পাহাড়ী নদীটিা উপলবিছানো পথে পার হলাম। এইবার দূর থেকে জলপতনের গর্জনশব্দ শোনা গেল-আরও একটু এগিয়ে গিয়ে চোখে পড়লো পেজ তুলোর বস্তার মত জলরাশি পাহাড়ের ওপর থেকে, বনের মাথা থেকে উপচে পড়চে। আবার একটা উঁচু পাহাড়ের ওপর থেকে আমরা নিচে নামতেই বাঁদিকের বনের আড়ালটা সরে গেল। জলপ্রপাতটা একেবারে চোখের সামনে আমাদের । পরেশবাবু কবি লোক, উচ্ছসিতস্বরে বলে উঠলেন-বাঃ, আতি চমৎকার ! আমরা সবাই সায় দিলাম। জায়গাটা যেন আগাগোড়া পাথরে বঁধানো-কোথাও এতটুকু মাটি বা বালি নেই। স্তরে স্তরে নেমে গিয়েচে পাথরের ধাপে ধাপে-যেন পুকুরের সান বঁধানো ঘাট । মিঃ সিংহ বল্লেন-আমরা সকলে স্নান করে নেবে চলুন ওই জলে। পরেশবাবু বল্লেন-ম্যালেরিয়া হবে না তো নাইলে ? সুবোধ বল্লে-না, এখানে ম্যালেরিয়া কোথায় ? আমরা বসে বসে দেখলুম কতক্ষণ। স্থানটির গম্ভীর সৌন্দৰ্য দেখবার জিনিস ! শুধু বর্ণনায় পড়ে ঠিক বােঝা যাবে না। যে উত্তঙ্গ শৈলগাত্র বেয়ে এই বড় ঝর্ণাটা পড়চে, তার চারিপাশে ঘন বনানী, চুণাপাথরের প্রাচীর। যতদূর দেখা যায় পাহাড়ের গায়ে ল্যাণ্টান ক্যামের ফুলের গাছ-ফুল ফুটে আছে।