বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ব ভারত রেলপথে tyఫి খুশতিনগরী—শিউড়ী হইতে ১২ মাইল দক্ষিণে ইরাণের কিরমান হইতে আগত সৈয়দ শাহ আবদুল্লা কিরমানী নামক পীরের দরগাহ্ এ অঞ্চলে বিশেষ শ্রদ্ধার সহিত পূজিত হয়। রাণীগঞ্জ-হাওড়া হইতে ১২১ মাইল দূর। ইহা একটি বিখ্যাত শ্রমিক কেন্দ্র। কয়লার খনির জন্যই ইহার প্রসিদ্ধি। ইহার চারিদিকের স্থানকে খনির রাজ্য বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। এখানে কাগজের কল, মাটার বাসন ও টালির কারখানা, তেলের কল প্রভৃতি বহু কলকারখানা আছে। রাণীগঞ্জ শহরটি অতি সুন্দরবূপে সজ্জিত ও বেশ পরিষ্কার-পরিচছা। রাণীগঞ্জ শহরের নিকটবর্তী সিয়ারসোল একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম। এই গ্রামে রাজা উপাধিধারী একঘর পশ্চিম দেশীয় ব্রাহ্মণ জমিদারের বাস । রাণীগঞ্জ হইতে ৩ মাইল দক্ষিণে দামোদর নদের অপরপারে বাঁকুড়া জেলার অস্তগত মেবিয়া গ্রামে প্রচুর গালা প্রস্তুত হয়। মেঝিয়া হইতে ৩ মাইল পশ্চিমে ভুলুই গ্রামে আড়াইশত বৎসরের উপর হইল জগৎরাম রায় জন্মগ্রহণ করেন। ইনি এবং ইহার পুত্র রামপ্রসাদ রায় মিলিয়া “অদ্ভুত অষ্টকাও রামায়ণ ” নামে একখানি রামায়ণ রচনা করেন। ইহা ছাড়া জগৎরাম “দুর্গাপঞ্চরাত্রি” নামে শিবদুর্গার দাম্পত্য-কলহের একখানি সুন্দর অম্লমধুর কাব্য রচনা করেন। রামপ্রসাদও ‘ কৃষ্ণলীলামৃতরস ” নামে একখানি বৃহৎ কাব্য রচনা করেন। আসানসোল জংশন—হাওড়া হইতে ১৩২ মাইল দর। ইহা বৰ্দ্ধমান জেলার অন্যতম মহকুমা এবং খনি অঞ্চলের প্রধান শহর। রেল লাইন খুলিবার পূবেৰ্ব এই অঞ্চল জঙ্গলময় ছিল ও এখানে লুন্ঠনবৃত্তিধারী চুয়াড় প্রভৃতি জাতি বাস করিত। বৰ্ত্তমানে ইহা আধুনিক সভ্যতার সবৰ্বপ্রকার নিদর্শনপূর্ণ সমৃদ্ধ শহর। বিখ্যাত গ্রাণ্ড ট্রাঙ্ক রোড এই শহরের মধ্য দিয়া গিয়াছে। ইহা পূর্বভারত রেলপথের একটি প্রসিদ্ধ বিভাগীয় সদর। বাংলা নাগপুর রেলপথের একটি শাখা মানভূম জেলার মধ্য দিয়া পুরুলিয়া ও আদড়া হইয়া এখানে আসিয়া মিলিয়াছে। সীতারামপুর জংশন—হাওড়া হইতে ১৩৮ মাইল দূর। ইহা রাণীগঞ্জ ও বরাকরের কয়লার খনির প্রায় মধ্যস্থলে অবস্থিত। এখান হইতে গ্রাও কর্ড লাইন বাহির হইয়াছে ও অণ্ডাল হইতে একটি ছোট লুপ শাখা আসিয়া এখানে মিলিত হইয়াছে। প্রধান লাইনের উপর সীতারামপুর জংশনের পরের স্টেশন রূপনারায়ণপুর। ইহা হাওড়া হইতে ১৪৫ মাইল দূর এবং বৰ্দ্ধমান জেলার ও বাংলা দেশের শেষ রেলস্টেশন। ইহা একটি স্বাস্থ্যকর স্থান । রূপনারায়ণপুর অতিক্রম করিবার পর গাড়ী সাঁওতাল পরগণার এলাকায় পড়ে। এই অঞ্চলে বহুদিন হইতেই বঙালীর বসবাস আছে। বস্তুত: বাঙালীরা গিয়া দলে দলে এই সকল স্থানে উপনিবেশ স্থাপন করিবার পর হইতেই এই অঞ্চল সমৃদ্ধি লাভ করিয়াছে। এদিককার সাধারণ দশ্যের বৈশিষ্ট্য এই যে ইহার প্রায় সবর্বত্রই পাহাড় পবর্বত, পাবর্বত্য নদ নদী শোভিত উন্মুক্ত প্রাস্তর, পবর্বতগাত্রে ও প্রাস্তরে শাল, মহুয়া, আম, জাম ও নিম প্রভৃতি বৃক্ষের শোভা ও মনোহরম পুপাথিকা দুষ্ট হয়। সমুদ্রের ঢেউএর মত এখানকার মাটি যেন ঢেউ খেলিয়া গিয়াছে। এতদঞ্চলে দীঘি বা পুষ্করিণী বড় একটা নাই। কুপের জলই সাধারণত: ব্যবহৃত হয়। মিহিজাম, জামতাড়া, কৰ্ম্মাটাড়, মধুপুর, জগদীশপুর, গিরিডি, জসিডি, দেওঘর, শিমুলতলা প্রভূতি স্বান বাঙালীর স্বাস্থ্যনিবাসরুপে গড়িয়া উঠিয়াছে। এই সকল স্থানে বহু কলিকাতাৰাসী বাঙালীর