বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলায় ভ্রমণ 8כל প্রাপ্ত হয়। এই স্টেশন হইতে মোটরবাসযোগে ১৬ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে মুর্শিদাবাদ জেলার অন্যতম মহকুমা কান্দীতে যাইতে হয়। এই শাখা পথের চৌরীগাছা স্টেশন হইতে কান্দী ৮ মাইল পশ্চিমে। কান্দী শহর ময়ূরাক্ষী নদীর পূর্ববতীরে অবস্থিত। সুপ্রসিদ্ধ দেওয়ান গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ ও তাঁহার পৌত্র লালাবাবু কান্দী শহরের অধিবাসী ছিলেন। তাহাদিগের বাট কান্দীর রাজবাটী নামে পরিচিত। গঙ্গাগোবিন্দ ওয়ারেন হেক্টংসের দক্ষিণ হস্ত যুরূপ হইয়া উঠিয়াছিলেন। লালাবাবু সংসার ত্যাগ করিয়া বৃন্দাবনে ধৰ্ম্ম সাধনায় কাটাইয়াছিলেন। রাজবংশের প্রতিষ্ঠিত রাধাবল্লভজীউ বিগ্রহ এ অঞ্চলে বিশেষ প্রসিদ্ধ। রাসযাত্রার মেলার সময়ে এখানে মহাসমারোহ ও বহুলোকসমাগম হয়। কথিত আছে রাধাবল্লভ জীউর পূজাদির দৈনিক খরচ ৫০০ টাকা ছিল। কান্দীর দক্ষিণাকালীর মন্দির প্রাঙ্গণে দুগাপূজার পর চতুর্দশী তিথিতে বিশেষ ধুমধাম হয়। কান্দীর রাজবংশীয়গণ অনেকদিন কলিকাতার উপকণেঠ পাইকপাড়ায় বাস করিতেছেন বলিয়া তাহারা পাইকপাড়ার রাজা নামে খ্যাত। কান্দী মিউনিসিপ্যালিটির অন্তগত জেমো একটি পুরাতন পল্লী। স্বনামধন্য আচাৰ্য্য রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী মহাশয় এই গ্রামে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। এখানে রুদ্রদেব নামে এক শিব আছেন। এই শিব প্রাচীন বুদ্ধমূৰ্ত্তি বলিয়া অনেকের অভিমত। শিবরাত্রি ও চড়কের সময় এখানে বছ নরনারীর সমাগম হয় | কান্দী হইতে ৬ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত পাচঞ্চুপি একটি প্রাচীন ও বদ্ধিষ্ণু ভদ্রপল্লী। এখানে কয়েক ঘর ধনী জমিদারের বাস। এই গ্রামের উত্তর-পূবর্ব দিকে “ বারকোণার দোল ’ নামে একটি ধুংসাবশেষ আছে। অনেকের মতে ইহা একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারের ভগ্নাবশেষ। এই বিহারটিতে পাঁচটি স্তুপ ছিল বলিয়াই নাকি গ্রামের নাম পাচগুপি হইয়াছে। লালবাগ কোর্ট রোড—ব্যাণ্ডেল জংশন হইতে ১০৬ মাইল। এই স্থানে নামিয়া গঙ্গার পূৰ্ববতীরবর্তী মুর্শিদাবাদ জেলার অন্যতম মহকুমা লালবাগে যাইতে হয়। পূবর্ববঙ্গ রেলপথের মুর্শিদাবাদ স্টেশন দ্রষ্টব্য। লালবাগ কোর্ট রোড ষ্টেশন হইতে প্রায় ৩ মাইল পশ্চিমে কিরীটকণা একটি বিখ্যাত স্থান। এখানে দেবীর কিরীটের একটি কণা পড়িয়াছিল, দেবীর নাম বিমল বা কিরীটেশ্বরী, ভৈরব সম্বর্ত। কিরীটকণা বহুকাল হইতেই প্রসিদ্ধ তীর্থস্থানরূপে সন্মানিত। ইহা পীঠস্থান বলিয়া পূজিত; তবে কাহারও কাহারও মতে এখানে দেবীর অঙ্গ না পড়িয়া কিরীটের অংশ পড়িয়াছিল বলিয়া ইহা একটি উপপীঠ। “ তন্ত্রচুড়ামণি ” ও “মহানীলতন্ত্ৰ”এ কিরীটকণার উল্লেখ আছে। পাঠান ও মুঘলযুগে এই স্থানের বিশেষ প্রসিদ্ধি ছিল। শ্রীচৈতন্যদেবের সমসাময়িক মঙ্গল নামক জনৈক বৈষ্ণবের পূর্বপুরুষগণ কিরীটেশ্বরীর সেবক ছিলেন বলিয়া জ্ঞাত হওয়া যায়। শ্রীচৈতন্যদেবের সহিত সাক্ষাতের পর মঙ্গল বৈষ্ণব-ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়া বৰ্দ্ধমান জেলার চাদরা গ্রামে গিয়া বাস করেন ; তাহারই পৌত্র বদনচাঁদ ঠাকুর মনোহর সাহী সঙ্কীৰ্ত্তন রীতির প্রবর্তক। অষ্টাদশ শতাবদীতে বঙ্গাধিকারী দপনারায়ণ রায় কিরীটেশ্বরীর প্রাচীন মন্দিরের সংস্কার করেন ও এই স্থানে কয়েকটি শিৰ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই স্থানে কালীসাগর নামে একটি পুষ্করিণী খনন করাইয়া তাহার ঘাট বাধাইয়া দেন ও “ কিরীটেশ্বরীর মেলা " নামে একটি মেলার প্রবর্তন করেন। আজিও পৌষ মাসের প্রতি মঙ্গলবারে এই স্থানে মেলা বসিয়া থাকে। মুর্শিদাবাদে রাজধানী আসিবার পর Ba