বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y.ჭNoy বাংলায় ভ্রমণ মোটরবাস যাতায়াত করে। সবঙ্গ মাদুরের জন্য বিখ্যাত। লোয়াদ মাতাসা, যুগের জিলিপি ও গুড়ের জন্য প্রসিদ্ধ। o বালিচক হইতে ৩ মাইল দূরে কেদার নামক গ্রামে কেদারেশ্বর শিবের মন্দির আছে। ইনি “ভুড়তুড়ি কেদার” বা চপলেশ্বর শিব নামে অভিহিত হইয়া থাকেন। ইহারই নামানুসারে এই পরগণার কেদারকুণ্ড নাম হইয়াছে। রাজা তোডরমল্লের রাজস্ব তালিকায় কেদারকুণ্ড পরগণার নাম দেখিতে পাওয়া যায়। সুতরাং অনুমিত হয় যে তৎপূর্ব হইতেই এখানে এই শিব প্রতিষ্ঠিত আছেন। রাজা যুগলকিশোর রায় নামক জনৈক প্রাচীন জমিদার এই শিবমন্দিরের নির্মাতা বলিয়। কথিত। মন্দিরের পাশ্ববর্তী একটি কুণ্ড হইতে সবৰ্বদাই ভুড়ভুড় শব্দে বুদ্বুদ উঠে। এই জন্য শিবের নাম ভুড়তুড়ি কেদার হইয়াছে। সম্ভবত: নিকটস্থ ক্ষীরাই নদীর সহিত এই কুণ্ডের কোনরূপ যোগ থাকার জন্য এইরূপ জল বুদ্বুদ উঠিয়া থাকে। পৌষ সংক্রাস্তিতে এই কুণ্ডে স্নান করিলে সস্তান লাভ করা যায় এই বিশ্বাসে বহু নারী ঐ দিনে এখানে সমাবেত হন এবং তদুপলক্ষে এখানে সপ্তাহব্যাপী একটি মেলা বলে। বালিচক হইতে কেদার পর্য্যস্ত মোটরবাস পাওয়া যায়। খড়গপুর জংশন—হাওড়া হইতে ৭২ মাইল। এখানে বাংলা নাগপুর রেলের গাড়ী তৈয়ারী ও মেরামতের বিরাট কারখানা অবস্থিত। রেলের কল্যাণে খড়গপুর একটি নগণ্য গওগ্রাম হইতে প্রশস্ত রাজবন্ধু শোভিত ও বিদ্যুৎ-আলোকোজ্জল বিশাল শহরে পরিণত হইয়াছে। ইহা বাংলা নাগপুর রেলপথের একটি প্রধান জংশন। পূৰেৰ এই স্থানে একটি বিস্তীর্ণ মরুভূমির মত তরুলতাহীন উচচ ভূখণ্ড ছিল ; চারিদিকের সমতল ভূমি হইতে ইহা প্রায় ৪০ ফুট উচচ ছিল এবং লোকে ইহাকে “ খড়গপুরের দমদম৷ ” বলিত। ইহার উপর হইতে চতুদিকে বহুদূর গ্রামগুলিকে নিম্নভূমি বলিয়া মনে হইত। খড়গপুরে মাটীর রঙের পরিবর্তন লক্ষিত হয়। এখান হইতেই পাথুরে মাটী ও গৈরিক রঙ আরম্ভ হইয়াছে। এখানকার প্লাটফরম খুব দীর্ঘ; ইহা পৃথিবীর বৃহত্তম রেলওয়ে প্লাটফরমগুলির মধ্যে অন্যতম বলিয়া পরিগণিত। স্টেশনের নিকটে ইন্দাগ্রামে খড়েগশ্বর নামে শিবের একটি পুরাতন মন্দির আছে। ইহা খড়গপুর থানার কলাইকুণ্ড গ্রামের ধারেন্দার রাজা খড়গসিংহের নিৰ্ম্মিত; মতান্তরে বিষ্ণুপুর রাজ খড়গমল্ল ইহার প্রতিষ্ঠাতা । মন্দিরটি একটি বিস্তৃত প্রাস্তরের মধ্যে অবস্থিত। এই স্থানের নাম “হিড়িম্বডাঙ্গা ”। প্রবাদ, বনবাসকালে পঞ্চ পাণ্ডব এই স্থানে আগমন করিলে হিড়িম্ব রাক্ষসের সহিত তাঁহাদের সংঘর্ষ হয় এবং ভীমের হস্তে হিড়িম্বের নিধন ঘটে। হিড়িম্বের ভগিনী হিড়িম্বা ভীমের রূপে আকৃষ্ট হইয় তাহাকে বিবাহ করে। হিড়িম্বের নাম হইতেই "হিড়িম্বডাঙ্গ” নাম। খড়গপুর স্টেশনের চারি মাইল পূবর্বদিকে চাঙ্গুয়াল গ্রামে প্রস্তরনিৰ্ম্মিত প্রাসাদ, সেনানিবাস ও গড়ের ধ্বংসাবশেষ দৃষ্ট হয়। এইগুলি এবং নিকটস্থ ঘোলাদীঘি গ্রামের “বীর সরোবর ” প্রভূতি বৃহৎ জলাশয় রাজা বীরসিংহ এবং তাঁহার বংশধরগণের কীৰ্ত্তি। ভবিষ্য ব্রহ্মখণ্ড নামক গ্রন্থপাঠে জান৷ যায় যে চতুর্দশ শতকের প্রথম ভাগে দামোদর তীরে হেমসিংহ নামে এক ক্ষত্রিয় রাজা ছিলেন। তাহার ভ্রাতা বীরসিংহ তাম্রলিপ্ত, কর্ণদুগ ও বরদাভূমি জয় করেন। চাঙ্গুয়ালে তাহার রাজধানী छ्लि ! কেশিয়াড়ী খড়গপুর হইতে ১৬ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে কেশিয়াড়ী নামে একটি গ্রাম আছে। খড়গপুর হইতে এই স্থানে মোটরবাসে যাওয়া যায়। এককালে নানা বর্ণের তসরের কাপড়ের জন্য এই