পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8O तांश्लांश्च वशंीं নারায়ণগড়—খড়গপুর হইতে নারায়ণগড় ১৪ মাইল দূর। হান্দোলগড় নামে এখানে একটি প্রাচীন দুর্গের ভগ্নাবশেষ নারায়ণগড়ের প্রাচীন রাজবংশের কথা স্মরণ করাইয়া দেয়। এই দুর্গের পশ্চিম পাশ্ব দিয়া কটক যাইবার রাস্তা গিয়াছে। শ্রীচৈতন্যদেব এই পথ দিয়া পুরী গিয়াছিলেন। এখানে ধলেশ্বর নামক এক শিবের মন্দির আছে। কথিত আছে যে শ্রীচৈতন্যদেব এই মন্দিরের প্রাঙ্গনে হরিনাম কীৰ্ত্তন করিয়াছিলেন। তৎকালে এখানে কেশব সামন্ত নামে একজন ধনী ভূস্বামী বাস করিতেন। চৈতন্যদেবের মহিমা দর্শনে মুগ্ধ হইয়া কেশব তাহার ভক্ত হন। পূবৰ্বকালে নারায়ণগড়ের চারিদিকে চারিটি দরজা ছিল। ইহার মধ্যে প্রধান দরজাটি পশ্চিম দিকে অবস্থিত পুরী যাইবার রাস্তার উপর অবস্থিত ছিল এবং উহার নাম ছিল “ যম দুয়ার ”। এই রাস্তার উভয় পাশ্বে হিংস্র জন্তু পরিপূর্ণ গভীর অরণ্য ছিল। এই দরজাট বন্ধ করিয়া দিলে ওড়িষ্যা যাইবার পথ বন্ধ থাকিত। কথিত আছে, ওড়িষ্যায় যাইতে হইলে এই দরজার নিকট নারায়ণগড়ের রাজার “ ছাড় পত্র ” লইয়। তবে যাইতে পারা যাইত। দ্বিতীয় দরজার নাম “সিদ্ধেশ্বর দরজা ’ । উহার নিকটে সিদ্ধেশ্বর নামে এক শিব ছিলেন। তৃতীয়টির নাম মৃন্ময় দরজা বা “ মেটে দুয়ার ”। উহার প্রাচীর এত বিস্তৃত ছিল যে তাহার উপর দিয়া তিনজন অশ্বারোহী পাশাপাশি যাইতে পারিত। চতুর্থ দরজাটির কোন চিহ্ন নাই। প্রবাদ উহা কেলেঘাই নদীর মধ্যে কোথাও অবস্থিত ছিল এবং এমন সুকৌশলে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল যে প্রয়োজন হইলে উহা বন্ধ করিয়া নারায়ণগড়ের সমস্ত পথ জলপ্লাবিত করিয়া শক্রর গতি প্রতিরোধ করা যাইত। নারায়ণগড়ের প্রতিষ্ঠাতা গন্ধবর্ব পাল বিশেষ পরাক্রমশালী ছিলেন। তিনি ব্ৰহ্মাণী নামক * এক দেবী মুক্তির প্রতিষ্ঠা করেন। পুরী যাত্রী মাত্রকেই প্রণামী দিয়া “ব্রহ্মাণী দেবীর ছাপ” নামক এক প্রকার মুদ্রা লইয়া পুরী প্রবেশ করিতে হইত। প্রবাদ ব্ৰহ্মাণী দেবীর প্রতিষ্ঠার দিন যে ধৃত প্রদীপ জালা হইয়াছিল, তাহা একাদিক্ৰমে ছয় শত বৎসর পর্য্যস্ত সমভাবে প্রজ্জ্বলিত ছিল। ১২৯০ খৃষ্টাব্দে এই রাজবংশের শেষ রাজা পৃথ্বীবল্লভের মৃত্যুর সাথে সাথে উহা হঠাৎ নিবিয়া যায়। এখনও এই স্থানে মাঘীপূর্ণিমার দিন একটি মেলা বসিয়া থাকে। নিকটেই রাণীসাগর নামে প্রায় দুইশত বিঘা ব্যাপী একটি জলাশয় আছে। প্রবাদ, রাজা গন্ধবর্ব পালের মহিষী রাণী মধুমঞ্জরী রাত্রিশেষে স্বপ্ন দেখেন যে-কুলদেবতা ব্ৰহ্মাণী দেবী যেন তৃষ্ণাৰ্ত্ত হইয়া তাহার নিকট জল চাহিতেছেন। এই স্বপ্ন বৃত্তাস্ত কুলগুরুর নিকট ব্যক্ত করিলে তাহার নির্দেশ অনুযায়ী রাণী মধুমঞ্জরী এই বৃহৎ জলাশয় খনন করান। সাহজাদ খুররম—উত্তরকালের সম্রাট শাহজাহান, পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হইয়া যখন সম্রাট সৈন্যের দ্বারা পরাজিত হইয়া মেদিনীপুরের মধ্য দিয়া দাক্ষিণাত্যে পলায়ন করেন, তখন নারায়ণগড়ের রাজা শ্যামবল্লভ এক রাত্রির মধ্যেই তাহার গমনের জন্য রাস্তা প্রস্তুত করিয়া দেন। এই উপকারের কথা স্মরণ করিয়া পরবর্তী কালে সম্রাট শাহজাহান তাহাকে “ মাড়ি সুলতান " বা “পথের রাজা” উপাধি প্রদান করেন। যে ফার্মাণের দ্বারা এই উপাধি প্রদান করা হয় তাহার উপর রক্তচন্দনে সম্রাট শাহজাহানের পাঁচ আঙ্গুলের ছাপ ছিল। নারায়ণগড়ের নিকটবৰ্ত্তী কসবা গ্রামে একটি প্রাচীন মসজিদৃ আছে। এই মসজিদের একটি শিলালেখন হইতে জানা যায় যে ১৬৫৩ খৃষ্টাব্দে সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় পুত্র বাংলার