পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S88 - शां२लांग्न बत्रघ्नं কাউখালি ও খাজুরী—হিজলীর প্রায় ১২ মাইল উত্তর-পূবেৰ্ব কাউখালি গ্রাম। ১৮১০ খৃষ্টাব্দে এখানকার প্রসিদ্ধ আলোক স্তম্ভ (লাইট-হাউস) নিৰ্ম্মিত হয়। ভাগীরথীর তীরে ইহাই সবৰ্বপ্রথম আলোক স্তম্ভ। কাউখালির ৪/৫ মাইল উত্তরে রসুলপুর নদীর পূর্বতটে খাজুরীগ্রাম। অষ্টাদশ শতকের শেষ ও উনবিংশ শতকের প্রথমভাগে ইহা ভাগীরথীর উপর একটি প্রসিদ্ধ বন্দর ছিল। কলিকাতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ইহার উন্নতি হয়। তখনকার দিনে বড় বড় জাহাজ খাজুরীতে মাল খালাস ও মাল বোঝাই করিত এবং কলিকাতা পর্য্যন্ত মুলুপের সাহায্যে মাল আনা-নেওয়া করা হইত। তৎকালে বায়ু পরিবর্তনের জন্য বহু সম্রাস্ত ইংরেজ ও বাঙালী খাজুরীতে যাইতেন। কলিকাতা হইতে খাজুরীর টেলিগ্রাফ লাইনই ভারতের সবর্বপ্রথম টেলিগ্রাফ লাইন। ১৮৬৪ খৃষ্টাব্দে ভীষণ জল প্লাবনের ফলে খাজুরী বন্দর ধবংস হইয়া যায়। এখন মাত্র দুইটি বাড়ী ও ইংরেজদের একটি সমাধি ক্ষেত্র খাজুরীর অতীত গৌরবের সমৃতি বহন করিতেছে। ইহার একটি বাড়ী এখন ডাক্‌বাংলা এবং অপরটি ডাকঘর রূপে ব্যবহূত হইতেছে। দাতন—খড়গপুর জংশন হইতে দাঁতন ৩২ মাইল দূর। দাঁতনে একটি মুনসেফী আদালত আছে। এখানে উত্তম জাতি প্রস্তুত হয়। প্রবাদ, ওড়িষ্যা যাইবার পথে শ্রীচৈতন্যদেব এখানে দাঁতন বা দস্তকাষ্ঠ ব্যবহার করিয়াছিলেন বলিয়াই স্থানের নাম দাঁতন হইয়াছে। এই আখ্যানটির প্রমাণ স্বরূপ স্থানীয় একটি মন্দিরে প্রস্তরীভূত দন্তকাষ্ঠ রক্ষিত আছে। দাঁতনে জগন্নাথদেবের ও শ্যামলেশ্বর মহাদেবের প্রাচীন মন্দির আছে। কেহ কেহ বলেন যে দাতনের প্রাচীন নাম দন্তপুর। "দাঠাবংশ ” নামক বৌদ্ধগ্রন্থ হইতে জানা যায় যে ক্ষেম নামে বুদ্ধদেবের এক শিষ্য বুদ্ধের চিতা হইতে একটি দস্ত সংগ্রহ করিয়া উহ। কলিঙ্গ রাজ ব্ৰহ্মদত্তকে প্রদান করেন। ব্ৰহ্মদত্ত একটি মন্দির নির্মাণ করিয়া দন্তটিকে তন্মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং স্থানটির নাম দেন দন্তপুর। ব্ৰহ্মদত্তবংশের শিবগুহ নামক জনৈক নৃপতি ব্রাহ্মণ্য ধর্মের উপর বিশেষ অনুরক্ত ছিলেন, বৌদ্ধধর্মের উপর তাহার অনুরাগ ছিল না। কিন্তু একবার দন্তপুরের দন্তোৎসব দেখিয়া তিনি বিশেষ মুগ্ধ হন ও বৌদ্ধধৰ্ম্ম গ্রহণ করেন। রাজ্যবাসী ব্রাহ্মণগণ এই জন্য তাহার প্রতি রুষ্ট হইয় তাহার শাস্তি-বিধানের জন্য পাটলিপুত্রের হিন্দু নরপতির সাহায্য প্রাথনা করেন। পাটলিপুত্ররাজের সৈন্য শিবগুহকে বন্দী করিয়া তৎসহ বুদ্ধদন্তটিকেও পাটলিপুত্রে আনয়ন করে। এই ঘটনার অব্যবহিত পরেই পাটলিপুত্রে বহু আশ্চৰ্য্য ঘটনা ঘটায় পাটলিপুত্ররাজ ভীত হইয়া বুদ্ধদন্তসহ শিবগুহকে পুনরায় দস্তপুরে প্রেরণ করেন। পাটলিপুত্ররাজের মৃত্যুর পর পার্শ্ববর্তী অপর এক রাজা দস্তপুর আক্রমণ করিয়া শিবগুহকে নিহত করেন। রাজকুমারী হেমমালা এবং রাজমাতা উজ্জয়িনীরাজকুমার ছদ্মবেশে বুদ্ধদন্তটি লইয়া তাম্রলিপ্তের পথে সিংহলে গমন করেন। সিংহলরাজ মেঘবাহন পরম ভক্তি সহকারে ধৰ্ম্মমন্দিরে দস্তটির প্রতিষ্ঠা করেন। এখনও সিংহলে এই বুদ্ধদন্ত নিত্য পূজিত হইতেছে। দেবপ্রিয় তিষ্যের রাজত্বকালে খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাবীতে ফা-হিয়ে সিংহলে মহাসমারোহে বুদ্ধদন্ত প্রতিষ্ঠার বাধিক উৎসব দর্শন করিয়াছিলেন। দন্তপুর নগরের অবস্থান সম্বন্ধে মতভেদ আছে। কেহ কেহ বর্তমান রাজমহেন্দ্রীকে প্রাচীন দন্তপুর বলিয়া নির্দেশ করেন, কাহারও মতে পুরী বা জগন্নাথধামই দন্তপুর এবং জগন্নাথের মন্দিরই প্রাচীন দন্তমন্দির। সুপ্রসিদ্ধ প্রত্নতাত্বিক রাজেন্দ্রলাল মিত্র প্রমুখ মনীষীর মতে বর্তমান দাঁতনই