| / পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ ל"לל আছে যে একবার কলিঙ্গা নগরবাসী ধনা মনা নামক বণিক ভ্রাতৃদ্বয় জনৈক অনাথা বিধবার “হুখে” নামক বালক পুত্রকে ভুলাইয়া সুন্দরবনে নিয়া গিয়া দক্ষিণরায়ের আদেশে নরবলি দিবার উপক্রম করিলে, দুখের কাতর ক্রদনে বিচলিত হইয়া সুন্দরবনের অধীশ্বরী বনবিবি স্বীয় বীর অনুচর জঙ্গলী শার দ্বারা দক্ষিণরায়ের ব্যান্ত্রের কবল হইতে প্তাহাকে উদ্ধার করেন। জঙ্গলী শার নিকট যুদ্ধে পরাস্ত হইয়া দক্ষিণরায় কুমারখালির জঙ্গলে আসিয়া বড়খ। গাজীর শরণাপন্ন হন। দক্ষিণরায়ের মুখে সমস্ত বৃত্তান্ত অবগত ভূইয়া বড়খী গাজী দক্ষিণরায়কে সঙ্গে করিয়া কেঁদোখালির চরে বনবিবির দরবারে হাজির হইলেন । বনবিবি তখন অনাথিনীর পুত্র তুখেকে কোলে করিয়া বসিয়াছিলেন। “হেনকালে উপনীত গাজী দক্ষিণরায় । ছালাম করিল রায় বনবিবির পায় ॥ তাতল খা খোশাল খা আর আলিগণ । কর জুড়ি করিয়া আইল সৰ্ব্বজন ॥ হরি রায় বিষম রায় আর কাল রায় । আসিয়া ছালাম করে বনবিবির পায় ৷ কহেন বড়খা গাজী শুন নেক মাই। তোমার হুজুরে মাগো এই ভিক্ষা চাই। দক্ষিণরায়ের পর কোপ কর দূর । এখাতের আইলাম তোমার হুজুর ॥ এতেক শুনিয়া মায়ের দয়া উপজিল । সদয় হইয়া মাতা বলিতে লাগিল ॥ আঠার ভাটির মধ্যে আমি সবার মা। মা বলে যে ডাকে তার হুঃখ থাকে না ৷ সঙ্কটে পড়িয়া যে বা মা বলে ডাকিবে । কদাচিৎ হিংসা তায় কভু না করিবে। . রায় বলে শুন মাতা আরজ আমার । সত্য সত্য তিন সত্য সত্য অঙ্গীকার ॥ বনেতে আসিয়া যে বা মা বলে ডাকিবে। আমা হৈতে হিংসা তার কদাচ না হবে ॥” (মুনশী বয়নদিন রচিত পুথি) এইরূপে বড়খ৷ গাজীর মধ্যস্থতায় বনবিবির সহিত দক্ষিণরায়ের আপোষ-রফ হইল। বলবিবির আদেশে ধনা-মন খেকে কন্যা সম্প্রদান করিয়া সে যাত্রা নিস্তার পায়। প্রভাকর রায়ের পুত্র ও ব্রাহ্মণ নগরের রাজা মুকুটরায়ের সেনাপতি মানুষ দক্ষিণরা। কি করিয়া মুন্দরবনের একাংশের আধিপত্য লাভ করেন ও পরে দেবত্ব প্রাপ্ত হন, সে কথার উল্লেখ পরে করা হইয়াছে (“ঝিকরগাছা ঘাট” দ্রষ্টব্য)।