পাতা:বাহ্যবস্তুর সহিত মানব প্রকৃতির সম্বন্ধ বিচার (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উপক্রমণিকা

তদনুসারে বহু-পশুসমাকীর্ণ মহারণ্য তাহার আবাসস্থান, এবং তথায় তাহার হিংস্র স্বভাব প্রকাশের স্থল ও সীমা সুচারুরূপে নিরূপিত আছে। নিরুপদ্রব ছাগ মেষ প্রভৃতি তৃণ পত্র আহার করিয়া যেরূপ তৃপ্তি সুখাস্বাদন করে, জীবদ্রোহী ব্যাঘ্র আপনার নৃশংস শক্তি প্রচার করিয়া সেই রূপই তৃপ্তি-সুখ প্রাপ্ত হয়। অপরাপর জন্তুর প্রকৃতিও এই প্রকার, অর্থাৎ তাহাদিগের শারীরিক ভাব, মানসিক বৃত্তি ও তাবৎ বাহ্য বস্তুবিষয়ক সম্বন্ধ সমুদায় পরস্পর উপযোগী হইয়া তাহাদিগের প্রতি এক এক সুশৃঙ্খল ও সুকৌশল সম্পন্ন পরম সুন্দর যন্ত্র স্বরূপ হইয়াছে। এবম্প্রকার তাহাদিগের সমুদায় গুণের পরস্পর ঐক্য ও বাহ্য বিষয়ে তাহার সম্যক উপযোগিতাই সুখোৎপত্তির কারণ। যদি এক দিবস প্রত্যক্ষ করিতাম, কোন ব্যাঘ্র সমুখোপস্থিত প্রত্যেক জন্তুর শরীর আক্রমণ করিয়া বিদীর্ণ করিতেছে, এবং পর দিবস দেখিতাম, সেই ব্যাঘ্র পূর্ব্ব দিবসের ঐ সকল নিষ্ঠুর ব্যবহার আলোচনা করিয়া পশ্চাত্তাপে পরিতপ্ত হইতেছে, বা কারুণ্য-রসাভিষিক্ত হইয়া সেই পূর্ব্ব-বিদারিত পশুদিগের ক্ষত বিক্ষত গাত্রে ঔষধ লেপন করিতেছে, অথবা কেবল নগরে বা প্রান্তরে অবস্থিতি করিতে তাহার একান্ত অনুরাগ জমিয়াছে, তবে তাহার প্রকৃতি কেমন বিরুদ্ধধর্ম্মাক্রান্ত বোধ হইত! এবং অনায়াসেই এপ্রকার অনুভৰ হইত, যে তাহার মানসিক বৃত্তি সকলের যেরূপ পরস্পর অনৈক্য বিপর্য্যয় ও বাহ্য