পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ
১১১

প্রকট হইয়া উঠিয়াছে, ঠিক এই অবস্থা আর কখনও হয়তো হইয়া থাকিবে, কিন্তু তাহা মানুষের স্মরণাতীত, সে মন্বন্তর প্রাগৈতিহাসিক। ইহা সাধারণ কালধর্ম্ম নয়—ইহা অকাল; মহাকালরূপী মহোরগ যেন নিজ বিষে জর্জ্জরিত হইয়া নিজের পুচ্ছ দংশন করিতেছে! মানুষের মনুষ্যত্ব এমন ভাবে আর কখনও সঙ্কটাপন্ন হইয়াছে বলিয়া মনে পড়ে না। ইহাকে সংশোধন করিবার জন্য, যাহা কালাতীত শাশ্বত তাহাকেই প্রয়োজন। “তদাত্মানং সৃজাম্যহং”—অবতার বলিতে হয় বল, না বলিলেও ক্ষতি নাই, কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণের মধ্যে যাহার প্রকাশ তাহা সেই ‘আত্মা’—কালের মধ্যে কালাতীতের আবির্ভাব। ইহা ব্যক্তি নয়—বাণী, ঘটনা নয়—প্রকাশ। ইহার প্রচার আছে—সন-তারিখ নাই। শতবার্ষিকী অনুষ্ঠান যাহাদের জন্য হইয়া থাকে এবং হওয়া প্রয়োজন শ্রীরামকৃষ্ণ তাহাদের পর্য্যায়ভুক্ত নহেন। তাঁহার আবির্ভাব ও তিরোভাবের পুণ্যতিথি যদি পালন করিতে হয়, তবে বর্ষ-পঞ্জিকা আছে, তাহাই যথেষ্ট।

 শ্রীরামকৃষ্ণ সম্বন্ধে কোনও নূতন কথা বলিবার অধিকার বা যোগ্যতা আমার নাই—আমি তাঁহার সম্বন্ধে পরোক্ষভাবে যেটুকু জ্ঞান লাভ করিয়াছি, তাহা হইতেই দুই একটি কথা বলিব। সৌভাগ্যের বিষয় এই যে, শ্রীরামকৃষ্ণের বাণী বা তাঁহার লীলাপ্রসঙ্গ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এত ভক্ত, ভাবুক ও মনীষী কর্ত্তৃক লিপিবদ্ধ হইয়াছে যে, সে সম্বন্ধে কোনরূপ ক্ষোভের কারণ আর নাই। আমি বর্ত্তমান প্রসঙ্গে, সেই বহুপ্রচারিত ও সুপরিজ্ঞাত তথ্যরাশি হইতে যে কয়েকটির প্রতি বিশেষ করিয়া পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে চাই, তাহার জন্য ভগিনী নিবেদিতার অপূর্ব্ব গ্রন্থ The Master as I saw Him, এবং মঃ রোম্যাঁ রোলাঁর সাহিত্যিক প্রতিভা ও মনীষার অভিনব নিদর্শন— তাঁহার দুইখানি