পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৮
বিবিধ কথা

বিশেষভাবে গানের যুগ, কবিজীবনের সন্ধ্যাকাশ অপূর্ব্ব গীতরাগে রঙিন হইয়া উঠিয়াছে।

 রবীন্দ্রনাথের কবিকল্পনার এই যে রূপান্তর—ইহার একটি দৃষ্টান্ত দিব। আমরা সকলেই জানি, এই গীতিরসসাধনার কালে রবীন্দ্রনাথ একবার কতকগুলি কবিতায় একটি অভিনব কাব্যজগৎ সৃষ্টি করিয়াছিলেন—এই কবিতাগুলির নাম ‘বলাকা’। এমন একটি সম্পূর্ণ সৃষ্টির নিদর্শন একালের রচনায় আর নাই। ‘বলাকা’য় রবীন্দ্রনাথের কবিদেহের জন্মান্তর হইয়াছে—এই কাব্যে কবি যে প্রেরণার বশীভূত হইয়াছেন তাহাতে মনে হয়, পূর্ব্বের সে রবীন্দ্রনাথ ও এই রবীন্দ্রনাথ এক ব্যক্তি নহেন। ‘বলাকা’র কয়েকটি পংক্তি উদ্ধৃত করিবার পূর্ব্বে আমি সেকালের রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতা হইতে কিঞ্চিৎ উদ্ধৃত করিব। কবিতাটির নাম “যেতে নাহি দিব”। এই কবিতায় কবি বলিতেছেন—

কি গভীর দুঃখে মগ্ন সমস্ত আকাশ,
সমস্ত পৃথিবী! চলিতেছি যতদূর
শুনিতেছি একমাত্র মর্ম্মান্তিক সুর,
“যেতে আমি দিব না তোমায়!” ধরণীর
প্রান্ত হ’তে নীলাভের সর্ব্বপ্রান্ততীর
ধ্বনিতেছে চিরকাল অনাদ্যন্ত রবে
“যেতে নাহি দিব, যেতে নাহি দিব!” সবে
কহে, “যেতে নাহি দিব!”···
হায়,
তবু যেতে দিতে হয়, তবু চ’লে যায়!