পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ Σ8 বিবিধ প্ৰবন্ধ । একটা মাড়োয়ারী সমাজ সৎ প্ৰবৃত্তি দ্বারা প্রণোদিত হইয়া লক্ষ লক্ষ অর্থব্যয়ে ভদ্রলোকদের বৃদ্ধ অকৰ্ম্মণ্য গো-মহিযাদি পোষণ করিতেছেন ; কিন্তু তঁহাদের এই কাৰ্য্য ছিন্ন মূলে জলসেচনের ন্যায় বলিতে হইবে ; কারণ যে প্রকারের সদ্যপ্ৰসূত গাভীগুলি বৎস বৃদ্ধি করিয়া গো-খাদকের দেশেও রক্ষিত হয় এবং কোটী কোটী ধন উৎপাদনা করিয়া তাহাদের রক্ষক ও সেবকদের অন্ন সংস্থান করিতে থাকে, কিছুকালের জন্য দুগ্ধ বন্ধ হইলেই সেই প্রকারের দুগ্ধবতী গাভীগুলি হিন্দুপ্ৰধান ভারতবর্ষে কষাইয়ের হস্তে ধবংস ও হ্রাস প্ৰাপ্ত হইতেছে এবং যে গুলি বৃদ্ধ ও অকৰ্ম্মণ্য সেগুলি মাড়োয়ারী সমাজের সাহায্যে রক্ষিত হইতেছে! ঐ সকল জীবের মৃত্যুর পর তাহারা তাহাদিগকে ফেলিয়া দিতেছেন ; অস্থিসংগ্ৰহকারীরা তাহাদিগের কঙ্কালগুলি সংগ্ৰহ করিয়া দেশান্তরে প্রেরণ করিতেছে ; তাহাতে এদেশের ভূমির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধির একটী প্ৰধান উপায় নষ্ট হইয়া যাইতেছে। যে কারণে বহু পূৰ্ব্ব হইতে ভারতবর্ষে গোজাতির এত আদর, সেই মূল কারণের বিষয় লক্ষ্যভ্ৰষ্ট হইয়া এখন কেবল ধৰ্ম্মের ঠাট বজায় রাখিতে অনেক গোরক্ষিণীসমিতি প্ৰতিষ্ঠিত হইতেছে বটে ; কিন্তু দূরদর্শিতার অভাবে গাভীর সংখ্যা হ্রাস পাওয়াতে দেশে গাভীর মূল্য বৃদ্ধি হইতেছে এবং নিম্নশ্রেণীর ভারতবাসী যে কেবল গাভী বিক্রয় করিয়া ঋণজাল হইতে মুক্ত হইতেছে এরূপ নহে, অপরের গাভী সেবা করিবার সুযোগও পাইতেছে না। গাভীর সংখ্যা হ্রাস পাওয়াতে তাহারা আর পূর্বের মত দুগ্ধ খাইতে পাইতেছে না, কাজেই তাহারা শারীরিক ও মানসিক বলে বঞ্চিত হইয়া আপনারা দুৰ্ব্বল হইয়া পড়িতেছে এবং দুর্বল ক্ষুদ্রকায় ও মেধাহীন সন্তান-সন্ততিতে বংশ বৃদ্ধি করিয়া দেশে দরিদ্রতা আহবান করিতেছে। দলে দলে আগত যত অপাত্র ভিক্ষুককে দান করিয়া তাহদের ব্যক্তিগত দুষ্কৰ্ম্মের প্রশ্ৰয় দেওয়া অপেক্ষা তাহাদের দরিদ্রতার কারণ অনুসন্ধান