পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বস্তি । २१७ সভ্য সমাজের শীর্ষস্থান অধিকার করিবার ইচ্ছা করি, এ সমস্তই উত্তম বিধি-ব্যবস্থার অন্যতম মঙ্গলময় ফলসমষ্টি ব্যতীত আর কিছুই নহে । যেখানে শাসন-বিধি নাই, সেখানে কি প্রচুর পরিমাণে সামগ্ৰী উৎপন্ন হওয়া সম্ভবপর হয়, না প্রাত্যহিক আহারের নিশ্চিতত থাকে ? যদি নিজের প্রাণাতিপাত পরিশ্রমে উৎপন্ন শস্য, ব্যবহার বা হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা, দসু্য বা তস্করে লাভ করিল, যদি সুবিধি-ব্যবস্থার অবৰ্ত্তমানে জোর যার মুলুক তার হইল, তাহা হইলে প্রচুর পরিমাণে সামগ্ৰী উৎপন্ন বা প্ৰস্তুত হওয়া ত পরের কথা সামান্য পরিমাণেও কেহ কিছুক্ত করে। কিনা তাহা সন্দেহের বিষয় ; এবং আহারীয় সামগ্ৰী যদি আদৌ উৎপন্ন না হইল, প্রাত্যহিক আহার-সংস্থান কেবল দেবতাসুলভ ও কল্পনার বিষয় ভিন্ন আর কি বলিয়া অনুমিত হইতে পারে ? সৰ্ব্বজন-সম্পত্তি, বনে বিচরণশীল পশু বা জলের মৎস্যই কেবল আহাৰ্য্যরাপে নিদিষ্ট হইলেও, উহার প্রাপ্তিকাল নিরূপণ করা দৈবজ্ঞেরও সাধ্যের অতীত । বৰ্ব্বরের সমাজ সম্বন্ধে আলোচনা করিলে দেখিতে পাওয়া যায়, যে অনশন-ক্লেশ-নিবারণ কল্পে এবং লব্ধধন কিছুকাল ভোগের নিমিত্ত রক্ষা করিতে, তাহার। সকলেই বদ্ধপরিকর । আহারীয় সামগ্রীর অন্বেষণে পরস্পরের জিঘাংসায় সকলেই প্ৰায় হিংস্র৷ জন্তুর ন্যায় খাদ্য খাদক সম্বন্ধে পরিণত । তাহদের বন্ধু নাই, আত্মীয় নাই, স্বজন নাই, সমাজ নাই, স্বদেশ নাই । কয়েক দিন নিরূদ্বেগে ভোগের নিমিত্ত যদি ধন সামগ্ৰী সঞ্চিত না করিয়া প্রাত্যহিক আহারের অন্বেষণে সমস্ত জীবন অতিবাহিত করিতে হইল, তাহা হইলে প্ৰণয়, বাৎসল্য, আত্মোন্নতি বা ভগবৎ-চিন্তার অবকাশ কৈ ? দুগ্ধবতী গাভী ও মেষ প্রভৃতি পশুপালন পূর্বক ক্ষেত্র কর্ষণ করিয়া, উর্ণাজাত বস্ত্ৰাদিতে লজ্জা নিবারণ ও প্ৰতিদিনের আহারের নিশ্চিত তায় আদিমানব যখন বঞ্চিত হইত, তখন কি সে নিশ্চিন্ত হইয়া দাম্পত্যপ্ৰণয়ের