পাতা:বিবিধ সমালোচন (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়).pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা, মিরন্দা এবং দেসদিমোনা।
১৩৫

স্নিগ্ধং বীক্ষিতমনাতোপি নয়নে যৎ প্রেরয়ন্ত্যা তয়া,
যাতং যচ্চ নিতম্বয়ো গুর্রুতরা মন্দং বিলাসাদিব।
মাগা ইত্যুপরুদ্ধয়া বদপি তৎ সাসূর মুক্তা সখী,
সর্ব্বং তৎ কিল মৎপরায়ণ মহো! কামঃ স্বতাং পশ্যতি॥

 শকুন্তলা দুষ্মন্তকে ছাড়িয়া যাইতে গেলে গাছে তাঁহার বল্পল বাঁধিয়া যায়, পদে কুশাঙ্কুর বিঁধে। কিন্তু মিরন্দার সে সকলের প্রয়োজন নাই—মিরন্দা সে সকল জানে না; প্রথম সন্দর্শন কালে মিরন্দা অসঙ্কুচিত চিত্তে পিতৃসমক্ষে আপন প্রণয় ব্যক্ত করিলেন,

This
Is the third man I e’er saw; the first
That e’er I sighed for.

 এবং পিতাকে ফর্দিনন্দের পীড়নে উদ্যত দেখিয়া, ফর্দিনন্দকে আপনার প্রিয়জন বলিয়া, পিতার দয়ার উদ্রেকের যত্ন করিলেন। প্রথম অবসরেই ফর্দিনন্দকে আত্মসমর্পণ করিলেন।

 দুষ্মন্তের সঙ্গে শকুন্তলার প্রথম প্রণয় সম্ভাষণ, এক প্রকার লুকাচুরি খেলা। “সখি, রাজাকে ধরিয়া রাখিস কেন?”—“তবে, আমি উঠিয়া যাই”—“ আমি এই গাছের আড়ালে লুকাই”—শকুন্তলার এ সকল “বাহানা” আছে; মিরন্দার সে সকল নাই। এ সকল লজ্জাশীলা কুলবালার বিহিত, কিন্তু মিরন্দা লজ্জাশীলা কুলবালা নহে—মিরন্দা বনের পাখী—প্রভাতারুণোদয়ে গাইয়া উঠিতে তাহার লজ্জা করে না, বৃক্ষের ফুল, সন্ধ্যার বাতাস পাইলে মুখ ফুটাইয়া ফুটিয়া উঠিতে তাহার লজ্জা করে না। নায়ককে পাইয়াই, মিরন্দার বলিতে লজ্জা করে না যে—

By my modesty,
The jewel in my dower—I would not wish
Any companion in the world but you;