ওমর আলী বলিলেন,—“সে কথায় তোমার কাজ কি? তোমার কাজ তুমি কর।”
“কাহার সঙ্গে যুদ্ধ করিব? সিংহ কি কখনও শৃগালের সহিত যুঝিয়া থাকে? শুনিয়াছি মোহাম্মদ হানিফা সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বীর। তুমি কি সেই হানিফা?”
“আমার সহিত যুদ্ধ করিতে তোমার হৃদয়ে ভয়ের সঞ্চার হইয়া থাকে, ফিরিয়া যাও।”
সোহ্রাব হাসিয়া বলিল,—“এত দিন পরে আজ নূতন কথা শুনিলাম। সোহ্রাব-জঙ্গের হৃদয়ে ভয়ের সঞ্চার! তুমি যদি মোহাম্মদ হানিফা হও, বীরত্বের সহিত পরিচয় দাও। পরিচয় দিতে ভয় হয়, তুমিই ফিরিয়া যাও।”
“আমি ফিরিয়া যাইব?”
“তবে কি তুমি যথার্থই মোহাম্মদ হানিফা?”
“এত পরিচয়ের আবশ্যক কি? তোমাকে আমি জিজ্ঞাসা করিতেছি: তুমি কি পাপাত্মা এজিদ?”
“সাবধান। দামেস্ক-অধিপতির অবমাননা করিও না।”
“আমি তোমার সঙ্গে কথা কহিতে ইচ্ছা করি না, তোমার তরবারির ক্ষমতা দেখিতে চাহি।”
“জানিলাম, তুমিই মোহাম্মদ হানিফা।”
“শোন্ কাফের। শোন্ নারকী! তুই তোর অস্ত্রের আঘাত ভিন্ন যদি পুনরায় কথা বলিস্, তবে তুই যে পাথর পুজিয়া থাকিস্, সেই পাথরের শপথ!
“আমি পাথর পূজা করি, তুই ত তাহাও করিস্ না? নিশ্চিন্তভাবে নিরাকারের উপাসনায় কি মনের তৃপ্তি হয়রে বর্ব্বর?”
“জাহান্নামী কাফের। আবার বাক্চাতুরী? তুই আমাদের জাতীয় নীতির বহির্ভূত বলিয়া কথা কহিতে সময় পাইতেছিস্?”
“আমি তোমার পরিচয় না পাইলে কখনও অপাত্রে অস্ত্রনিক্ষেপ করিব না। ভাল কথাই বলিতেছি,— তুমি যদি মোহাম্মদ হানিফা না হও তবে তোমার সঙ্গে আমার যুদ্ধ নাই—যুদ্ধ নাই। তুমি আমার পরম বন্ধু, প্রিয় সুহৃদ।”