মুসলমান রাজ্যের রাজা—সেই রাজরাজেশ্বর, মহারাজাধিরাজ আজ রাজপদে বরিত হইয়াছেন। রাজমুকুট তাঁহারই শিরে শোভা পাইতেছে, রাজ-অস্ত্র তাঁহারই কটিদেশে দুলিতেছে।”
“অলীদ, তোমার বুদ্ধি এরূপ না হইলে ভিখারীর ধর্ম্ম গ্রহণ করিবে কেন? আমি শুনিয়াছি, মোহাম্মদ হানিফাকে মদিনার লোকে রাজা বলিয়া স্বীকার করিয়াছে। সমগ্র মুসলমান-রাজ্য মোহাম্মদ হানিফার নামে কম্পিত হয়,—কেমন নূতন ধার্ম্মিক?”
“ধর্ম্মের সঙ্গে হাসি-তামাসা কেন? আপনার জ্ঞান থাকিলে কি আজ হানিফার বিরুদ্ধে যুদ্ধ-ডঙ্কা বাজাইতে পারিতেন? আপনি মন্ত্রীহারা, জ্ঞানহারা, আত্মহারা হইয়াছেন। অতি অল্প সময় মধ্যেই রাজ্যহারাও হইবেন। আপনার জীবন হরণের জন্য মহাবীর হানিফা আছেন। আমাদের ক্ষমতার মধ্যে যাহা, তাহার কথা বলিলাম। বলুন, আজিকার যুদ্ধে স্বার্থ কি?”
“হানিফার জীবন-শেষ, জয়নাল আবেদীন-বধ—মদিনার সিংহাসন লাভ। আর স্বার্থের কথা কি শুনিবে? সে স্বার্থ অন্তরে, হৃদয়ে,— চাপা।”
“ঈশ্বরের ইচ্ছায় সকলই চাপা থাকিবে। আর মুখে যাহা বলিবেন, তাহাই কেবল মুখে থাকিবে। বলুন ত মহাশয়, জয়নাল আবেদীনকে কি প্রকারে বধ করিবেন!”
“কেন, বন্দীর প্রাণবধ করিতে আর কথা কি?”
“তবে বুঝি রাত্রের কথা মনে নাই? থাকিবে কেন? কথাগুলি পেয়ালায় গুলিয়া পেটে ঢালিয়াছেন!”
এজিদ একটু চিন্তা করিয়া বলিলেন, “হাঁ হাঁ, মনে হইয়াছে; জয়নাল বন্দীগৃহ হইতে পলাইয়াছে। আমার রাজ্যে—সে যাবে কোথায়?”
“যেখানে যাইবার সেখানেই গিয়াছেন। ঐ শুনুন, সৈন্যগণ কাহার জয়-ঘোষণা করিতেছে।”
“জয়নাল কি হানিফার সঙ্গে মিশিয়াছে?”
“আপনি বিবেচনা করিয়া দেখুন, মোহাম্মদ হানিফা আজ সেনাপতি,