পাতা:ব্রাহ্মণ-রোমান-ক্যাথলিক-সংবাদ - দোম আন্তোনিও দো রোজারিও.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৷৷৵৹
ব্রাহ্মণ-রোমান-ক্যাথলিক-সংবাদ

৩৩ হইতে ৪৮, ১৫৫ হইতে ১৫৮, ৩২১ হইতে ৩২৬, ৩৭১ ও ৩৭২ এবং ৩৮০-র পর বাকী পৃষ্ঠাগুলি নাই। এই সংস্করণে ৩৯১ পৃষ্ঠায় গ্রন্থ শেষ হইয়াছে। ফাদার হস্টেন তাঁহার প্রবন্ধে এই খণ্ডিত পুস্তকখানিরই বিস্তৃত আলোচনা করিয়াছেন।

 দোম আন্তোনিয়োর পুস্তকের পর্ত্তুগীজ অনুবাদ করিয়াছেন পাদ্রী মানুয়েল। সম্ভবতঃ তাঁহারই যত্নে এভোরার পুথি লেখা হইয়াছিল। সুতরাং দোম আন্তোনিয়ো ও তৎকৃত “শাস্ত্রসম্পর্কীয় তর্ক ও বিচার”-সম্বন্ধে আলোচনা করিবার পূর্ব্বে পাদ্রী মানুয়েল ও তাঁহার দুইখানি বই-সম্বন্ধে দুই-একটি কথা বলা অপ্রাসঙ্গিক হইবে না।

 মানুয়েল দা আসুম্পসাঁওর জন্মস্থান এভোরা পর্ত্তুগালের রাজধানী লিস্‌বন হইতে ৭৫ মাইল দূরে অবস্থিত। আয়তনে ক্ষুদ্র হইলেও এভোরা অত্যন্ত প্রাচীন সহর। খ্রীষ্টের জন্মের আশী বৎসর পূর্ব্বে রোমান সেনাপতি সারটরিয়াস এখানে শিবির স্থাপন করিয়াছিলেন। ৭১২ খ্রীষ্টাব্দে মুসলমানেরা এই জায়গা দখল করেন, আবার চারি শত সত্তর বৎসর পরে এইখানেই তাঁহারা পর্ত্তুগালের খ্রীষ্টান বীরদিগের হস্তে পরাজিত হন। পূর্ব্বে পর্তুগালের রাজারা মধ্যে মধ্যে এভোরায় আসিয়া থাকিতেন। জিল ভিসেন্তের কয়েকখানি নাটক এইখানেই অভিনীত হইয়াছিল। ১৫৫০ খ্রীষ্টাব্দে এভোরায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হইয়াছিল। বিশ্ববিদ্যালয়টির অস্তিত্ব বহুদিন হয় লোপ পাইয়াছে, কিন্তু এভোরার প্রাচীন গির্জা (ক্যাথিড্রাল) এখনও পর্ত্তুগালের স্থাপত্য-গৌরবের অন্যতম নিদর্শন বলিয়া বিবেচিত হয়। এভোরার গ্রন্থালয়ে বহু প্রাচীন গ্রন্থ, অপ্রকাশিত পুথি এবং ঐতিহাসিক চিঠিপত্র আছে। এই গ্রন্থালয়ের অন্যতম অধ্যক্ষ কুহ্না রিভার বহুদিন পর্ত্তুগীজ-ভারতে রাজকার্য্যে নিযুক্ত ছিলেন। ভারতবর্ষের ইতিহাসে তাঁহার বিশেষ অনুরাগ ছিল। তাঁহার সংগৃহীত কাগজপত্র এখন এভোরার গ্রন্থালয়ে আছে। ভারতবর্ষের ইতিহাস যাঁহারা আলোচনা করিয়া থাকেন তাঁহাদের পক্ষে এখানকার পুথি ও চিঠিপত্র বিশেষ প্রয়োজনীয়।

 মানুয়েল দা আসুম্পসাঁও কবে কোন্ বংশে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন তাহা আমরা জানি না। তিনি কবে সন্ন্যাস গ্রহণ করিয়াছিলেন, কোথায় কি ভাবে তাঁহার শিক্ষা সমাপ্ত হইয়াছিল, তাহাও আমাদের অজ্ঞাত। তাঁহার ভারতবর্ষে আগমনের সময়ও আমাদের জানা নাই। আমরা কেবল এইটুকু জানি যে ১৭৩৪ সাল হইতে ১৭৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি ভাওয়ালের খ্রীষ্টান প্রচারকদিগের পরিচালক ছিলেন। তৎকৃত বাঙ্গালা পুস্তকদ্বয়ের শিরোনামা ও ভূমিকা এবং পরবর্ত্তী কালের চিঠিপত্র হইতে মাত্র এইটুকুই জানা গিয়াছে।