পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. . . . . . সিপাহী-বিদ্রোহের সময় দিল্লী নগরে যে পৈশাচিক লীলাখেলা সংঘটিত । হইয়াছিল তাহা ইতিহাসপাঠকগণ সকলেই অবগত আছেন। পাঠক ! বুড়ে বয়সে এ কেমন ভুল,-“দিল্লীকা লাডঙ্গুর' কথা বলিতেই ভুলিয়া গিয়াছি। এ অতি উপাদেয় পদার্থ, যাহার নাম শৈশব হইতেই শুনিয়া শুনিয়া রসনায় জলের সঞ্চার হইত, আজ সেই প্ৰিয়তম জিনিষটিকে দেখিতে পাইয়া উহার সদ্ব্যবহার করিবার জন্য উৎকষ্ঠিত হইয়াছিলাম এবং যখন উহা ক্ৰয় করিয়া আস্বাদ করিলাম –সে কথা—সে পাস্তানের বিষয় আর উল্লেখ করিয়া উপহাসিত হইতে চাহি না। প্রচলিত জন প্ৰবাদ । “দিল্লীকা লাড়, যে খায়া ওবি পস্তায়—যো নেই খায়া ওবি পস্তায়া এ উক্তি অক্ষরে অক্ষরে সত্য । লাডডর আকার অত্যন্ত বৃহৎ এক পয়সায় একটা করিয়া বিক্রয় হয়, বাহিরে মােয়ার মত-ভিতরে তুষ, করাতের গুড়া ইত্যাদিতে পরিপূর্ণ। দিল্লী নগরী দর্শনান্তে আমরা আজমিরাভিমুখে রওয়ানা হইলাম। দিল্লীতে অপরিচিত বাঙ্গালী পৰ্য্যটকের থাকিবার কোনওরূপ অসুবিধা নাই, বহু সরাই, হোটেল ও বাঙ্গালী বাবু থাকায় যেখানেই যাওয়া যায়। সেখানেই আদর যত্ন ও সম্বৰ্দ্ধনা মিলে। দিল্লী ছাড়িতে ছাড়িতে মনে হইল, এই কি সে প্রাচীনের গৌরব কেতন সৌধমালা সুশোভিত সুন্দর নগরী, কোথা সেই ইন্দ্ৰ প্ৰস্থ ? কোথা দুৰ্য্যোধন, কোথা রাজা যুধিষ্টির-যার স্বর্ণ পুরী একদিন দেশে দেশে করিত প্রচার হিন্দুর বীরত্ব গৰ্ব-বীৰ্য্য—অহঙ্কার ! নাই-নাই--কিছু নাই—শুধু দীর্ঘশ্বাস বাতাস বহিয়া আনে। অতীতের কথা, শ্মশানের চারিদিকে একি অট্টহাস, কালের ভীষণ মূৰ্ত্তি-এ কি নশ্বরতা ! পাঠান-মোগল-কোথা ? কোথায় নাদির, হাহাকারে পরিপূর্ণ দিল্লীর গগন, ১৬৭