বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৩১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটী তাজ পৰ্য্যন্ত, অপরটি দিল্লী পৰ্যন্ত—দুঃখের বিষয় যে আমাদের গাইড সে পথ দুইটী আমাদিগকে দেখাইতে পারিল না, এ উক্তি আমাদের নিকট নিতান্ত মিথ্যা বলিয়াই প্ৰতীতি হইল। মচ্ছি।ভবনের সম্মুখস্থ ছাদের উপরে যে দিকে যমুনা প্রবাহিত, সে দিকে দুই খানি তক্ত বা প্ৰস্তরাসন আছে। উহার একখানি কৃষ্ণবৰ্ণ, অপরখানি শ্বেতবর্ণ। এই কৃষ্ণবৰ্ণ প্ৰস্তারাসন খানি একটা দেখিবার জিনিষ। কথিত আছে যে সম্রাটু নিশীথে এই কৃষ্ণবর্ণ শিলাসনের উপরে স্বয়ং উপবেশন করিতেন এবং অপর খানার উপরে মন্ত্রী বীরবল বসিয়া সম্রাটু আকবরের সহিত নানাবিধ বাক্যালাপে তাহার চিত্তবিনোদন করিতেন । এখান হইতে যমুনার সৌন্দৰ্য্য লোচনানন্দদায়ক। কোথায় সেই ভারতবিজয়ী সম্রাট আর কোথায়ই বা সেই রহস্যালাপে নিপুণ বীরবল ! কালচক্রের বিঘুর্ণনে র্তাহারা কোন অদৃশ্য জগতে চলিয়া গিয়াছেন তাহা কে জানে ? কিন্তু অদ্যাপিও তেমনি বিশীর্ণ যমুনা কল-কল্লোলে বহিয়া যাইতেছে, তেমনি করিয়া প্ৰকৃতির সমুদয় বিচিত্র-লীলা সম্পাদিত হইতেছে—কিন্তু তাহারা আর নাই ! এই ত সেই প্রস্তরাসন—এই ত সেই যমুনা-এই ত সেই আগ্ৰা দুর্গ-সেই প্ৰাচীন মসজিদ সমূহ, কিন্ত হায় ! তঁাহারা কোথায় ! সেঁ। সোঁ শব্দে সমীরণ একটা দীর্ঘ নিশ্বাসে জগতের নশ্বরতা প্রচার করিয়া গোল—যমুনাও করুণ কালনাদে তাহারি প্রতিধ্বনি গাহিতে গাহিতে হৃদয়ে নৈরাশ্য জাগাইয়া দিল ! হায় ! বসুন্ধরা। --মানবের শান্তি-সুখ কি তোমার সহে ? এই সমৰ্ম্ম দুঃখেই বুঝি কবি গাহিয়াছেন ;- “ . “মানব জীবন ছাই বড় বিষাদের।” বাদশাহ যে কৃষ্ণবৰ্ণ প্ৰস্তারাসনের উপর উপবেশন করিতেন তাহা মধ্যস্থল দিয়া ফাটিয়া গিয়াছে, উহা শ্লেটজাতীয় প্রস্তর বলিয়া পণ্ডিতগণ ঠিক এস্থানে বাদশাহের গুপ্ত দরবার বসিত। এই কক্ষটি দেখিতে পরম রমণীয়। দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে ইহা ৬৪ ফুট ৯ ইঞ্চি ও ৩৪ ফিট, উচ্চতা ২২ ফিট । একক্ষে বসিয়া আকবয় বাদশাহ মহারাজা মানসিংহ, টােডরমল প্রভৃতির সহিত যুদ্ধ সংক্রান্ত ও রাজস্ব সং RSb দেওয়ান খাস।