পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৪১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ । বেদবতী নারায়ণকে এবং তুলসী হরিকে পতিরূপে পাইবার জন্য তপস্যা করা সত্ত্বেও দুর্বসার শাপে শঙ্খাসুরকে পতিরূপে প্ৰাপ্ত হন, কিন্তু পরে পুনরায় কমলাকান্তকে স্বামীরূপে লাভ করেন। এই পুণ্যবতী তুলসী হরির শাপে বৃক্ষরূপা এবং তুলসীর শাপে হরি শালগ্ৰাম শিলারূপে পরিণত হন। তুলসীর নামান্তর বৃন্দা, তিনি ঐ স্থানে তপস্যা করেন। সেই জন্যই ইহার নাম বৃন্দাবন হইয়াছে। বৃন্দাবনের নামোৎপত্তি সম্বন্ধে অপর আরেকটা প্ৰবাদ এই যে শ্ৰীমতী রাধিকার ষোড়শ নামের মধ্যে বৃন্দা নাম ও একট, তাহারই রম্য ক্রীড়া-কানন বলিয়াই ইহার নাম বৃন্দাবন হইয়াছে। পুরাণকারগণের মতে বৃন্দাবন অতি মনোহর স্থান । বৃন্দাবনকে আমরা মানসনয়নে যে মনোহর রম্য কাননারূপে দর্শন করিয়াছিলাম, প্ৰত্যক্ষ দৃষ্টে তাহাতে নিরাশ হইতে হইল। “পদ্মপুরাণে” পড়িয়াছিলাম :- “প্ৰধানং দ্বাদশারণ্যং মহাত্ম্যং কথিতং ক্ৰমাৎ । ভদ্রগ্ৰী লৌহভাণ্ডীর মহাতালখদীরকাঃ ॥ বকুলং কুমুদং কাম্যং মধু বৃন্দাবনং তথা । দ্বাদশৈতা বনসংখ্যাঃ কালিন্দ্যাঃ সপ্ত পশ্চিমে ৷ ( পদ্ম পুঃ পাতাল খণ্ড, ৩ অঃ । ) আজ কোথায় সেই ভদ্রবন, লৌহবন, ভাণ্ডীরবন, মহাবিন, তালবন, আর কোথায়ই বা খাদীর, বকুল, কুমুদ, কাম্য, মধু প্ৰভৃতি ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণের সেই দ্বাদশ বিহার কানন ভূমি ? যে স্থানে একদিন নবীন জলধর শ্যাম নটবর লুকোচুরি খেলিতেন, আজ তাহা সুন্দর সুন্দর হত্ম্যমালায় পরিশোভিত হইয়া মনোহর নগরে পরিণত হইয়াছে। যে কাননভূমি মুখরিত করিয়া একদিন বঁাশী বাজিয়া রাধিকার হৃদয়-আকুল করিয়া দিত, আজ সেখানে কবিত্ব বিহীন অতি কঠোর গভমেণ্টের আফিস ও কাছারী বসিয়াছে । সময়ের এমনি পরিবর্তন বটে। পুরাণবর্ণিত বৃন্দাবন এখন কোনও অদৃশ্য স্বপ্নরাজ্য বলিয়াই মনে হয়। এখন আর সেই | “বনং কুসুমিতং শ্ৰীমন্নদচিত্ৰ মৃগদ্বিজম। গায়ন্ময়ুর ভ্রমরং কুজৎ কোকিলশাবকম৷” Jb"V