বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৬৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਨਵ নৰনাটক হইতে যাজপুর:৪৪ মাইল দূরে অবস্থিত। অতি প্ৰাচীন কাল হইতেই ইহা হিন্দুতীৰ্থ বলিয়া বিশেষ বিখ্যাত। যাজপুর ইতিহাস প্ৰসিদ্ধ নগর,-ওড়িষ্যার সোমবংশীয় মহাশিবগুপ্ত যযাতি নামক নরপতি কর্তৃক এই স্থানে ওড়িষ্যার রাজধানী স্থাপিত হয়-এ নিমিত্তেই প্ৰাচীন তাম্রশাসনে ও শিলালিপি ইত্যাদিতে ইহার নাম ‘যাতি’ নগর দৃষ্ট হয়। বৈতরণী নদীর দক্ষিণকুলে যাজপুর নগর অবস্থিত। যাজপুরের নামোৎপত্তি পৌরাণিক কিম্বদন্তী সম্বন্ধে পৌরাণিক কিম্বদন্তী এইরূপ শুনিতে পাওয়া যায় ও ইতিহাস। যে, প্ৰাচীন কালে বৈতরণীর দক্ষিণতােট ব্ৰহ্মা অশ্বমেধ যজ্ঞ সম্পাদন করিয়াছিলেন, সেইজন্য ইহার নাম যজ্ঞাপুর হয়, ক্রমশঃ ঐ যজ্ঞাপুর শব্দ অপভ্ৰংশ হইয়াই যাজপুর হইয়াছে। বৰ্ত্তমান সময়ে এস্থানে মহকুমা হওয়ায় পূর্ব গৌরব বৈভব একেবারে পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয় নাই। মহারাজ তিকেশরী নামক কেশরীবংশীয় নরপতি ওড়িষ্য জয় করিয়া ৪৭৪ খৃষ্টাব্দে যাজপুরে রাজধানী স্থাপন করেন। এস্থানের যজ্ঞক্ষেত্ৰ, গদাক্ষেত্র, বিরজাক্ষেত্ৰ, নাভিক্ষেত্ৰ, প্রভৃতি বহু হিন্দুতীর্থ বিরাজিত আছে। পৌরাণিক কিম্বদন্তী এইরূপ যে, গয়াসুর যখন বিষ্ণুর চরণতলে দেহ বিস্তার করিয়াছিল, সে সময়ে তাহার মস্তক গয়াক্ষেত্রে এবং নাভিদেশ যাজপুরে সংস্থিত হয়—সেইজন্য ইহাকে নাভিতীর্থ কহে । আবার অপর পুরাণের মত এই যে, মহাদেব সতীদেহ স্বন্ধে করিয়া যখন নানা স্থানে উন্মত্ত হইয়া ভ্ৰমণ করিতে থাকেন, তখন ভগবান বিষ্ণু কর্তৃক সুদৰ্শন চক্রদ্বারা সতীদেহ খণ্ডিত হইবার সময় ভগবতীর নাভিদেশ পতিত হওয়ায়, ইহার নাম নাভিক্ষেত্রও হইয়াছে। যাজপুরে পূর্বে বহু সুন্দর সুন্দর হিন্দু দেব দেবীর মন্দির ও বিগ্ৰহাদি ছিল, কিন্তু ১৫৫৮ খৃষ্টাব্দে হিন্দুধৰ্ম্ম বিদ্বেষী বিখ্যাত কালাপাহাড়ের সহিত যাজপুরের নিকট তৎকালীন ওড়িষ্যার নরপতি মুকুন্দদেবের যুদ্ধ হয়, সেই যুদ্ধে ওড়িষ্যার স্বাধীনতাসূৰ্য্য অস্তমিত হয় এবং ওড়িষ্যাৰাসিগণ মুসলমানের অধীনতা স্বীকার করে। মহারাজা যযাতি ○ ●○