বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

 একজন বৃহদাকার পুলিস তার কলার ধ’রে ধমকে উঠলো, চুপ রও। জনতাকে ভয় দেখিয়ে বলতে লাগলো, ভাগো।

 মা বললেন, কোনো কিছুতেই ভয় পেয়ো না। ওরা কি যন্ত্রণা দেবে? এর চাইতে ঢের-ঢের বেশি যন্ত্রণা জীবন-ভোর সইছো তোমরা।···

 চুপ কর বলছি, ব’লে একজন পুলিস তাঁর একহাত ধরলো, তারপর অন্যদিক থেকে আর একজন অন্য হাতটা ধ’রে লম্বা পা ফেলে মাকে হিঁচড়ে টেনে নিয়ে চললো।

 মা বলতে লাগলেন, এর চেয়ে ঢের ঢের বেশি নির্যাতন অহর্নিশ গোপন-কাঁটার মতো তোমাদের অন্তর-বিদ্ধ ক’রে তুল্‌ছে, তোমাদের শক্তি নষ্ট করে দিচ্ছে।···

 গোয়েন্দা গর্জন করে উঠ্‌লো, এই বুড়ি, থাম।

 মা বে-পরোয়া হ’য়ে বলতে লাগলেন,— এই নব-উদ্বুদ্ধ আত্মাকে হত্যা করে কার সাধ্য?···

 একটা গাল দিয়ে গোয়েন্দাটা মার মুখের ওপর এক চড় লাগালো। একমুহূর্তের জন্য মা চোখে অন্ধকার দেখলেন। রক্তের নোনা স্বাদে তাঁর মুখ ভরে এলো। কানে এলো ক্ষিপ্ত জনতার চীৎকার, খর্বদার, ওঁকে মেরো না।— শয়তান কোথাকার—দোব এক ঘা বসিয়ে—

 মা উৎসাহিত হ’য়ে বলতে লাগলেন—রক্তে ওরা যুক্তিকে ডুবিয়ে দিতে পারবে না, সত্যের শিখাকে নিভিয়ে দিতে পারবে না তারা।

 মার মাথায় পিঠে ঘাড়ে ঘা পড়তে লাগলো। চারদিকের সবকিছু যেন ঘুরতে আরম্ভ করলো। চারদিকে চীৎকার, তর্জন-গর্জন, হুম্‌কি—কানে যেন তালা লাগছে, কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসছে, পায়ের তলা

২০৩