বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

নিয়ে তোমার দেখতে হবে, দু’রকম প্রাণ নিয়ে তোমায় অনুভব করতে হ’বে,—একটা বলে, সবাইকে ভালোবাসো, আর একটা বলে, হুঁসিয়ার, ও তোমার দুশমন। কেন? কারণ এটা অদ্ভুত হলেও সত্য যে, মানুষ আজও এক-সমতলে দাঁড়িয়ে নেই। মানুষের মধ্যে সাম্য আনতে হ’বে আমাদের, সকল মানুষকে এক সারিতে দাঁড় করাতে হবে আমাদের, মাথা দিয়ে বা হাত দিয়ে মানুষ যতকিছু সুখ-সুবিধার সৃষ্টি করেছে সব আজ নিখিল মানুষের মধ্যে সমান ভাবে বেঁটে দিতে হবে। মানুষকে আর পরস্পরের ভয়ের এবং হিংসার গোলাম, লোভের এবং বোকামির দাস ক’রে রাখবোনা।

 এমনি কথাবার্তা প্রায়ই চলতো মা এবং এণ্ড্রির মধ্যে। পড়াও চললো মার। চোখ তাঁর ক্ষীণদৃষ্টি। এণ্ড্রি বললো, আসছে রববার শহরে নিয়ে গিয়ে তোমার চশমা কিনে দেব।

 তিন-তিনবার মা জেলে পেভেলের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন, কিন্তু পারেন নি। জেলের কর্তা অতিরিক্ত বিনয়ের সঙ্গে, ‘এখন হবে না, এই আসছে হপ্তায়’ বলে ফিরিয়ে দিয়েছে। মা এণ্ড্রিকে বললেন, খুব নম্র কিন্তু লোকটা।

 এণ্ড্রি হেসে বললে, হাঁ, বিনয়ের অভাব নেই, হাসিরও অভাব নেই। ওদের যদি বলা হয়, দেখো, এই লোকটা সাধু, জ্ঞানী, কিন্তু ও থাকলে আমাদের বিপদ। ওকে ফাঁসিতে লটকাও। বাস, আর কথা নেই। ওরা হাসতে হাসতে তাকে ফাঁসিতে লটকাবে, এবং ফাঁসিতে লটকিয়ে ওরা হাসতে থাকবে।

 মা বললেন, কিন্তু আমাদের ওখানে যে লোকটি খানাতল্লাশী করতে গিয়েছিল সে একটু ভাল।

৮০