বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হরিদ্বণ সন্দর বিস্তীৰ্ণ ক্ষেত্র চন্দ্রালোকে সাপ্ত রহিয়াছে, ঐ রমণীয় স্থানে অনেকগুলি কুটীরের মধ্যে যেন একটী ক্ষুদ্র কুটীর সরষরে। যেন দিবাবসানে সরব বহন্তে রন্ধন কাৰ্য সমাপন করিয়াছেন, যেন যত্নপবেক জীবিতনাথের জন্য অন্ন প্রস্তুত করিয়া রাখিয়াছেন, কুটারসম্মুখে সন্দের দন্বোর উপর বসিয়া রহিয়াছেন। যেন দরে ক্ষেত্রের দিকে চাহিয়াছেন, যেন সেই দিক হইতেই সমস্ত দিনের পরিশ্রমের পর একজন দীঘকায় পরষে কুটারাভিমুখে আসিতেছেন। সরযর হৃদয় নত্য করিয়া উঠিল, যেন সেই পর্ষশ্রেষ্ঠ আসিয়া সরয়াকে একটী নতন কণ্ঠমালা পরাইয়া দিলেন। পলিকে বালিকার হৃদয় আবার স্ফীত হইল, সরয ! সরষ! পাগলিনী হইও না। o এইরপে একমাস, দুইমাস, তিন মাস অতীত হইল, বৎসর অতিবাহিত হইল, কিন্তু সরযর কপেনালহরী শেষ হইল না। যে সবদেশীয় তরণে যোদ্ধাকে সরয এই বিদেশে একদিন সযত্নে খাওয়াইয়াছিলেন তাঁহার কমনীয় মুখখানি কল্পনার সঙ্গে সঙ্গে সময়ে সময়ে বালিকার মনে জাগরিত হইত। যে দীঘকায় পরষে সযত্নে সরষবোলার গলায় প্রিয় কণ্ঠহার পরাইয়া দিয়াছিলেন, তাঁহার অনিন্দনীয় রপে ও দেবতুল্য আকৃতি কল্পনার সঙ্গে সঙ্গে সবাদাই সরযর হৃদয়ে উদিত হইত। কল্পনা কি মায়াবিনী ? छामग्न गिब्रटझम : च्नीष्अजन —চেতন পাইয়া মেলি যবে অখি, দেখি তোমায় সম্মুখে । —মধসদন দত্ত । "মাক হে সার চিন্তা মিথ্যাবাদিনী নহে, বালিকার আশা বিশ্বাস নহে । একদিন সন্ধ্যার সময় সরয পনরায় সেই পক্ষেপাদ্যানে পাপ তুলিতেছেন, এবং মধ্যে মধ্যে কি মনে করিয়া হৃদয়ের সেই কণ্ঠহারের দিকে নিরীক্ষণ করিতেছেন। সরযর রূপ পাববৎ স্নিগ্ধ ও অনিন্দনীয়; সরষরে মুখমণ্ডলও পর্বোবৎ কমনীয় ও শান্ত। তথাপি এক বৎসরে সে রাপের কিছু পরিবত্তন ঘটিয়াছে, নব আশা ও নব উল্লাসে সে মুখমণ্ডল অধিকতর কমনীয় কান্তি ধারণ করিয়াছে। নতন জ্যোতিঃতে সে চক্ষম্বয় আলোকিত হইয়াছে, নতেন উদ্বেগ ও নতন লাবণ্যে সে শরীর টলমল করিতেছে, সরযর হৃদয়, মন, দেহ পরিবত্তিত হইয়াছে, সরষ বালিকা নহেন, প্রথম যৌবনে পদাপণ করিয়াছেন। রপেবতী, চিন্তাবতী, যৌবনসম্পন্না সরষ-ে বালা পাপ তুলিতেছেন এবং মধ্যে মধ্যে সেই কণ্ঠমালার দিকে দেখিয়া কি চিন্তা করিতেছেন, :::::: ཀཿ:; তুলিতে তুলিতে রাজপতকুমারী চাহিলেন-সহসা শিহরিয়া উঠিলেন,—সে হইতে আর নয়ন ফিরাইতে পারিলেন না। রাজপত যোদ্ধাও সেই পপোদ্যানে সেই রাজপতবালাকে পুনরায় দেখিতে পাইলেন। একদিন নিশীথে যাঁহার রপে দেখিয়া বিমোহিত হইয়াছিলেন, একদিন প্রভাতে যাঁহার পবিত্র কণ্ঠে প্রিয় কণ্ঠমালা পরাইয়া দিয়াছিলেন, যুদ্ধে ও সঙ্কটে, শিবিরে ও সৈন্যমধ্যে যাঁহার চিন্তা মধ্যে মধ্যে যোদ্ধার হৃদয়ে জাগরিত হইয়াছে, নিশীথে, স্বপ্নযোগে যাঁহার কমনীয় লজারঞ্জিত মনখখানি সব্বদাই যোদ্ধার সম্মুখে উদয় হইয়াছে, অদ্য বহুদিন পর সেই অনিন্দনীয় রপেলাবণ্য, সেই লজারঞ্জিত মুখখানি দেখিয়া রঘুনাথ ক্ষণেক বাক্যশান্য ও নিশ্চেন্ট হইয়া রহিলেন। চন্দ্র। রঘুনাথ ও সরযর উপর সন্ধাবষণ কর, তুমি নিশীথে জাগরণ করিয়া সকল দেখিতে পাও, কিন্তু জগতে এরপে দশ্য আর দেখ নাই। তরুণ বয়সে যখন মন প্রথম প্রণয়োল্লাসে উৎক্ষিপ্ত হয়, যখন নবজাত চন্দ্রকরের ন্যায় নবজাত প্রণয়ের আনন্দহিল্লোল মানস-জগতে গড়াইতে থাকে, যখন যৌবনের প্রথম প্রণয়ে সমস্ত জগৎ সিক্ত করে, আকাশ ও মেদিনী প্লাবিত করে, তখনই যেন এ জগতে চন্দ্রপরী অবতীর্ণ হয় । ক্ষণেক পর সরষবোলা অবনতমখী হইয়া st'