বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কি সেই স্নেহদানে বিরত হইবেন ? প্রতাপ পাব দোষ কিমত হইলেন, সাশ্রনয়নে হৃদয়ের ভ্রাতাকে হৃদয়ে ধারণ করিলেন। _ যে দুই জন মোগল প্রতাপকে পশ্চাদ্ধাবন করিয়াছিল, তাহারা কোথায় ? শক্ত দরে হইতে তাহাদিগকে দেখিয়াছিলেন, ভ্রাতার প্রাণনাশের সম্ভাবনা দেখিয়া অব্যথ" বশায় সে মোগলদিগের প্রাণনাশ করিয়াছেন। সন্ধ্যার ছায়া সেই নিজান উপত্যকায় অবতীর্ণ হইতে লাগিল, পব্বতের উপর আরোহণ করিতে লাগিল, জগৎকে ব্যাপ্ত করিতে লাগিল। সেই নিজান, নিঃশব্দ উপত্যকায় দুই ভ্রাতা অনেক দিনের অপহৃত ভ্রাতৃস্নেহ পাইলেন, অনেক দিনের হারাধন পাইলেন। স্নেহ হৃদয়ে লীন হয়, একেবারে শঙ্কে হয় না, সেই লীন স্নেহধারা অদ্য বীরদ্বয়ের হৃদয়কে প্লাবিত করিতে লাগিল। অনেকক্ষণ পর প্রতাপসিংহ কহিলেন-ভাই শক্ত ! আজি প্রতাপের পরাজয়ের দিন লহে, আজি বিজয়ের দিন; আজি যে অপহৃত ধন ফিরিয়া পাইলাম, যুদ্ধে পরাজয় তাহার নিকট কি তুচ্ছ ? ভাই! যেন আমরা পড়বের বিদ্বেষ চিরকাল বিস্মত হই, যেন আমাদের চিরকাল এইরুপ স্নেহ থাকে। ভাইয়ে ভাইয়ে মিলিত হইয়া স্বদেশ রক্ষা করিব; বিদেশীয় শত্রকে ভয় করিব না, দিল্লীশ্বর বা মানসিংহকে ভয় করিব না। নবম পরিচ্ছেদ ঃ নাহারা মগরো অন্তধৈৰ্য্যভরেণ বদ্ধবচনাং সংপীড্য পিন্ডোকৃতো ক্ষমমাশ্রিতশল্যবৎ পরিদহন মনাচিরং যঃ স্থিতঃ। সফয্যত্যেৰ স এষ সম্প্রতি মম ন্যস্কারভিন্নস্থিতেঃ কপোপায়মরুৎ প্রকীণৎপয়সঃ সিন্ধোরিবেীব্বানলঃ ॥ 乳 —বীরচরিতম। যেদিন রজনীতে তেজসিংহ দুজয়সিংহের প্রাণরক্ষা করিয়া আপন গহবরে আশ্রয় দান করিয়াছিলেন, আমরা এক্ষণে সেই দিনের কথা পনরখাপন করিব। রজনী দ্বিপ্রহরে দতেজয়সিংহের নিকট বিদায় লইয়া তেজসিংহ গহবরাভিমুখে যাইলেন না; অন্ধকার নিশীথে, কেবল তারকালোকে নিস্তব্ধ কানন ও তমসাচ্ছন্ন পৰবতপথ একাকী অতিবাহন করিতে লাগিলেন । যাইতে যাইতে কখন কখন গভীর বনের ভিতরে আসিয়া পড়িতেন । একে অন্ধকারময় রজনী, তাহাতে পাদপশ্রেণী অতিশয় নিবিড়, সুতরাং সে অন্ধকারে আপন হস্তও দেখা যায় না। কিন্তু সে পৰ্বতপ্রদেশে কোনও স্থান, কোনও গহর, কোনও উপত্যকা তেজসিংহের অজ্ঞাত ছিল না ; আদ্য আট বৎসর অবধি গৃহচ্যুত হইয়া ভালদিগের সহিত পৰ্বতে বিচরণ করিতেন, গহবরে শয়ন করিতেন, কাননে লুকাইয়া থাকিতেন। সেই আলোকশন্য, শব্দশনা, নৈশকানন একাকী অতিবাহন করিতে লাগিলেন। কানন হইতে নিৰ্ম্মকান্ত হইয়া সম্মুখে উন্নত পৰ্বতশ্রেণী দেখিতে পাইলেন। পৰবতপথ অতিশয় দস্তের, কিন্তু পব্বতীয় বরাহ শান্দালৈও তেজসিংহের অপেক্ষা পন্বত অতিক্রমে সক্ষম নহে। তেজসিংহের দক্ষিণ হস্তে সেই দীঘ বশৰ্ণ ; সেই বশাধারণীর দীঘ উন্নত অবয়ব দেখিলে ভীষণ বন্যজন্তুও ধীরে ধীরে পথ হইতে সরিয়া যাইত। প্রায় একপ্রহরকাল এইরাপে ভ্রমণ করিয়া তেজসিংহ অবশেষে একটী পৰ্বততলে উপস্থিত হইলেন। তখন মহত্তের জন্য দণ্ডায়মান হইলেন। ললাট হইতে দীঘকেশ পশ্চাতে নিক্ষেপ করিলেন, স্থিরনয়নে আকাশের দিকে ক্ষণেক নিরীক্ষণ করিলেন, কাহাকে উদ্দেশ করিয়া ধীরে ধীরে প্রণত হইলেন, পরে পুনরায় নিঃশব্দে একাকী সেই পৰ্বতে আরোহণ করিতে লাগিলেন। প্রায় একদণ্ডের মধ্যে সেই পবিতচড়ায় আরোহণ করিলেন। চড়ার অনতিদরে একটী গহবর ছিল, সেই গহনরমুখে উপস্থিত হইয়া তেজসিংহ আর একবার দণ্ডায়মান হইলেন। স্থিরনয়নে গগনের নক্ষত্রের দিকে ক্ষণেক নিরীক্ষণ করিলেন, পরে নিম্নে সেই আলোকশন্যে, শব্দশনা, সযস্তে জগতের দিকে চাহিয়া রহিলেন। তাঁহার মনে কি গভীর চিস্তার উদ্রেক 여