পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२५ রমেশচন্দ্র এই উপন্যাসখানি উৎসর্গ করেন তাঁহার কনিষ্ঠ সহোদর অবিনাশচন্দ্র দত্তকে । উৎসগ-পত্র হুবহু উদ্ধত হইল: উপহার বিজ্ঞানোৎসাহী, সংযতমনা, উদার চরিত্র কনিষ্ঠ সহোদর শ্রীঅবিনাশচন্দ্র দত্ত। প্রিয় ভ্রাতঃ ! ইউরোপ হইতে তুমি যে নানা ভাষা ও নানা বিদ্যা আহরণ করিয়া আসিয়াছ, তাহা যখন চিন্তা করি তখনই আনন্দিত হই। কিন্তু তুমি ইহা অপেক্ষাও অমল্য রত্বের অধিকারী। সে রত্ন, নিৰ্ম্মমল উদার চরিত্র, মনঃসংযমে অসাধারণ ক্ষমতা, বিজ্ঞান চচ্চায় আনন্দনীয় উৎসাহ ও জীবনব্যাপী চেশটা। এই অসাধারণ সদগুণসমুহ দ্বারা সবদেশের মঙ্গল সাধন কর, ভ্রাতার এই মঙ্গলেচ্ছা। ভ্রাতার জীবনব্যাপী স্নেহের সামান্য নিদর্শন স্বরুপ এই পুস্তকখানি তোমাকে অপণ করিতেছি। দক্ষিণ শাহাবাজপর তোমার চিরস্নেহাভিলাষী >ミb8 エTol শ্রীরমেশচন্দ্র দত্ত । রমেশচন্দ্রের চতুথ বা শেষ ঐতিহাসিক উপন্যাস—রাজপত জীবন-সন্ধ্যা। এখানির প্রকাশকাল ১৮৭৯ সন। তখন রমেশচন্দ্র ত্রিপরোয় সরকারী কমে নিযুক্ত ছিলেন। জ্যেষ্ঠ সহোদরকে পুস্তকখানি উৎসগা করিয়া তিনি যেসব কথা লিখিয়াছেন তাহা দ্বারা তাঁহার জীবনের কোন কোন নিগঢ়ে ঘটনার প্রতি যথেস্ট আলোকপাত হইতেছে। উৎসগপত্র এই: জ্যেষ্ঠ সহোদর শ্রীযোগেশচন্দ্র দত্ত । প্রিয় ভ্রাতঃ ! এই সংসার স্বরুপ ভীষণ কাৰ্য্যক্ষেত্রে তোমার স্নেহ, তোমার ভালবাসা আমার জীবনের শান্তিস্বরুপ হইয়াছে। শৈশবে ঐ স্নেহে আমি পন্টে হইয়াছিলাম, বাল্যকালে ঐ ভালবাসায় আমি স্নিগ্ধ ও প্রফুল্ল হইয়াছিলাম। এখনও জীবনের নানা আকাঙ্ক্ষায় যখন ক্লান্ত হই, বহর দরে, প্রবাসে, জীবনের অনন্ত চেস্টা-পরম্পরায় যখন শ্রান্ত হই, প্রাণের অলীকতায় বা সংসারের বাহ্যাড়ম্ববরে যখন বিরক্ত হই, তখন ঐ আদশরপে নিৰ্ম্মমল চরিত্র, ঐ অকৃত্রিম, অমায়িক স্নেহের কথা চিন্তা করি, আমার হৃদয় শীতল হয়, আমি শান্তি লাভ করি। জগৎ এ সমস্ত কথা জানে না, একথা কাহাকে বলিব, কে বুঝিবে ? জগতে নানা আকাঙ্ক্ষার কথা শুনিতে পাই, ধন, মান, খ্যাতি, ক্ষমতার জন্য অনন্ত চেস্টা ও উদ্যম দেখিতে পাই। এই চেন্টায় ভ্রাতাকে ভ্রাতা ঠেলিয়া যাইতেছে, পিতাকে পত্র ঠেলিয়া যাইতেছে। এ ভীষণ কাৰ্য্যক্ষেত্রে তোমার ন্যায় ঋষিতুল্য অমায়িক লোক অলক্ষিত, অপরিচিত, অনাদত ! শৈশব ও বাল্যকালের একমাত্র সহচর! জীবনের প্রথম ও প্রিয়তম সহৃদ! ত্রিংশ বৎসর যে তোমার অতুল স্নেহে প্রফুল্লতা ও শান্তি লাভ করিয়াছে, অদ্য সে তোমাকে এই সামান্য উপহার দান করিয়া আপনাকে চরিতার্থ জ্ঞান করিল। ত্রিপুরা তোমার চিরস্নেহাভিলাষী রমেশচন্দ্র এই বৎসরই (সেপ্টেম্বর ১৮৭৯) তাঁহার উপন্যাস চতুষ্টয়—“বঙ্গবিজেতা", “মাধবীকঙ্কণ”, “মহারাষ্ট্র জীবন প্রভাত”, “রাজপত জীবন-সন্ধ্যা”—একসঙ্গে শতৰষ নামে প্রকাশিত করিলেন। ইহার প্রায় সাত বৎসর পরে পঞ্চম উপন্যাস ‘সংসার’ বাহির হয়।. কোন শ্রেণীর উপন্যাসকে ঐতিহাসিক উপন্যাস রপে আখ্যাত করির সে সবন্ধে বিস্তর আলোচনা ইতিপবে হইয়া গিয়াছে। তবে আমরাও বঙ্কিম রচনাবলীর প্রথম খণ্ডে আচাৰ্য্য যদনাথ সরকার এবং দেশী বিদেশী মনীষিবন্দের উক্তি উদ্ধত করিয়া ঐতিহাসিক উপন্যাসের