পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংসার উদ্বেগের কথা বলিয়া আপনাকে ত্যক্ত করিব না, কিন্তু যদি এ বিবাহে আপনাদিগের মত না হয়, আমার জীবনের উদ্যম ও আকাঙ্ক্ষা, উৎসাহ ও চেণ্টা অদ্য সাঙ্গ হইল, হৃদয়ে একটী শেল লইয়া শ্রমজীবীরা পরিশ্রম করে না। হেমচন্দ্র একটা হাসিয়া বলিলেন;–একটী বালিকার জন্য উৎসাহী পরিষের জীবনের উৎসাহ లో శా గా శా శా శా శా డా గా గా नी ! হতাশ হইয়া শরৎ বলিলেন,—একটী অবলম্ববন না থাকিলে মনুষ্য-হৃদয়ে উৎসাহ, চেন্টা, ধৰ্ম্ম কিছুই থাকে না, অদ্য আমার জীবন অবলম্বনশন্য হইল। কিন্তু ঐ কথা আপনাকে বাঝাইতে পারি এরপে আমার ক্ষমতা নাই। তবে আপনারা স্থির করিয়াছেন, এ বিবাহে আপনাদিগের মত নাই ? হেমচন্দ্র শরতের দুইটী হাত ধরিয়া হাসিয়া বলিলেন,—শরৎ, তুমি ভাল করিয়া ব্যঝিয়া সঝিয়া এই কাৰ্য্যটী করিতেছ কি না, তাহাই দেখিতেছিলাম। উপরে যাও, আমার সত্ৰী তোমাকে বলিবেন, এ বিবাহে আমাদের সপণে মত আছে। হতভাগিনী সাধার জীবন জগদীশ্বর সখপণ করিবেন, তাহাতে কি আমাদের অমত হইবে ? জগদীশ্বর তোমাদের উভয়কে সখী করন। শরৎ উত্তর করিতে পারিলেন না। ধারা বহিয়া তাঁহার নয়ন হইতে আশ্রম পড়িতে লাগিল ! তিনি নীরবে হেমের হাত দটী আপনার মাথায় স্থাপন করিলেন, পরে উপরে গেলেন। শয়নঘরে বিন্দ একটী প্রদীপ জালিয়া একটী মাদরে পাতিয়া বসিয়াছিলেন, শরৎ সহসা —বিন্দদিদি, তুমি আমাকে জীবন দান করিলে, এ দয়া, এ স্নেহের কি পরিশোধ করিতে পারি? বিন্দর। ও কি শরৎবাব, ছাড়, ছাড়, ছি! ছি! যার পা ধরতে হবে, সে ধরবেই এখন, আমাকে কেন, ছি! ছেড়ে দাও । শরৎ একটু অপ্রতিভ হইয়া বলিলেন,—বিন্দদিদি, তুমি হেমবাবকে এ কথা বুঝাইয়াছ, তুমি এ কাষে সম্মত হইয়াছ, তাহার জন্য আমি চিরকাল তোমার নিকট কৃতজ্ঞ থাকিব। . বিন্দ । আর সম্মতি না দিয়া কি করি ? যখন বরকত্তা ও কন্যাকত্তা সম্মত হয়েছেন, তখন আর আমরা বারণ করে কি করি ? শরৎ । বরকত্তা ও কন্যাকত্তা কে ? বিন্দ। দেখতে পাচ্ছি বরই বরকত্তা, কন্যাই কন্যাকত্তা! বর এসে কনে দেখে গেলেন, বেশ পছন্দ হল, আর কনেও লুকিয়ে লুকিয়ে বর দেখলেন, বেশ পছন্দ হল, সম্বন্ধ স্থির হয়ে গেল ! শরৎ । বিন্দ দিদি, একবার উপহাস ত্যাগ কর, তুমি নিঃসঙ্কুচিত চিত্তে তোমার সম্মতি প্রকাশ করিয়া আমার মনকে শাস্ত কর! সন্ধা ছেলেমানষে, তার আবার সম্মতি কি ? সে এ গর কায্যের কি বুঝিবে বল ? বিন্দর। না গো, সে এখন বেশ বাবতে সঝেতে শিখেছে। তা বুঝি জান না ? সে যে এখন সেয়ানা মেয়ে হয়েছে, লুকিয়ে লুকিয়ে বিষবৃক্ষ পড়ে ! শরৎ। তোমার পায়ে ধরি বিন্দ দিদি, ঠাট্টা ছাড়, একবার তোমার মনের কথাটী বলিয়া আমাকে তৃপ্ত কর। বিন্দ। না বাব পায়েটায়ে ধরে না, এখনই সন্ধা দেখতে পাবে, আবার রাগ করবে ? তুমি চলে গেলে কি আমরা দটী বোনে কোঁদলু করব ? পরের দায়ে কেন ঠেকা বাব ? শরৎ । তোমার সঙ্গে আর পারিলাম না বিন্দদিদি ! মনে করিয়াছিলাম তোমার সঙ্গে পরামর্শ করিব, সব ঠিকঠাক করিব, তা দেখিতেছি আজ কিছুই হইল না। বিন্দ। তা ঠিকঠাক আর কি ? কেবল বামন পরত ডাকা বাকি আছে বৈ ত নয়, তা না হয় ডেকে দি বল ? না, কি আজকাল কলেজের ছেলে নিজে নিজেই বামন পরতের কাজ সেরে নেয় তাও ত জানি না। সুত্ৰী-আচারটা কি আমাদের করতে হবে, না তাও সন্ধা সেরে নেবে? তা না হয় সধাকে ডেকে দি ? ও সন্ধা! একবার এদিকে আয় ত বোন, শরৎবাবা তোমাকে ডাকচেন, বড় দরকার, একট শীঘ্ৰ করে আয়। ৪১১