বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৫১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कडूचिबलि नबिटन्छ्न : बिछाब्र-शश् বদ্ধমানের বিচার-গহ আজি বড় শোভাময়। তারিণীবাবর মৃত্যুর মকদ্দমার আজি বিচার হইবে। জেলার মাজিস্ট্রেট সাহেব তারিণীবাবকে জানিতেন, বড় অনুগ্রহ করতেন, পেন্সন লইতে তারিণীবাব বদ্ধমানে আসিলে তাঁহাকে আপনার খাস কামরায় ডাকিয়া বসাইতেন, তাঁহাকে অনারারি মাজিস্ট্রেট করবেন এরুপ মতও প্রকাশ করিয়াছিলেন। তারিণীবাবর মৃত্যুর সংবাদে ক্ষন্ধে হইয়াছিলেন, তারিণীবাবর বিধবার দরখাস্ত পাইয়া অতিশয় দুগ্ধ হইয়াছিলেন। বদ্ধ বয়সে সম্প্রান্ত তালুকদার ও জমিদারকে বিষ খাওয়াইয়া মারিয়াছে ? এক অজ্ঞাত পশ্চিমে সন্ন্যাসী এই নৃশংস কাৰ্য্য করিয়াছে ? নিরাশ্রয়া বিধবাকে অকলসাগরে ভাসাইয়া মন্মষের নিকট উইল দ্বারা সমস্ত সম্পত্তি অন্যের নামে লিখাইয়া লইয়াছে ? তারিণীবাবরে মৃত্যু না হইতে হইতেই সে বিধবাকে গ্রাম হইতে সনাতনবাটীতে তাড়াইয়া দিয়াছে ? এরপ নাশংস হৃদয়শন্য মানবাকৃতিধারী হিংস্ৰক পশু কি জগতে থাকিতে পারে ? রোষে তাঁহার শরীর কম্পিত হইল, তিনি ভাল করিয়া পুলিশ-তদন্তের আদেশ দিলেন। দারোগা বাব যে ডাইয়ারি পাঠাইলেন, মাজিস্ট্রেট সাহেব সমস্ত আদ্যোপান্ত পড়িলেন,পড়িয়া তুষ্ট হইলেন। ইন্সপেক্টর বাব যে রিপোর্ট পাঠাইলেন, তাহা তিনি ক্রোধে ফেলিয়া দিলেন,—বলিলেন, এ মকদ্দমার বিচার হওয়া নিতান্ত কত্তব্য, এখনই চালান দাও । সন্ধ্যার সময় খেলিবার স্থানে পুলিশ সাহেবের সহিত তাস খেলিতে খেলিতে বলিলেন,-তোমার ঐ দারোগাটী আমার জেলার মধ্যে কাৰ্য্যদক্ষ, তোমার ইন্সপেক্টরটী বড় গাধা । গড ফ্রাইডের ছটীতে মকদ্দমা আসিয়া পাহছিল। দারোগা মহাশয় সাক্ষী লইয়া নিজেই হাজির, মাজিস্ট্রেট সাহেবের কুঠীতে গিয়া আবেদন করিলেন,—অদ্যই প্রমাণ লেখা হউক, নচেৎ সাক্ষী খারাপ হইয়া যাইতে পারে, আসামী বড় ফেরেববাজ ও কুলোক, সাক্ষী হাত করিতে পারে! পুলিশের মকদ্দমা পোলাওয়ের মত তপ্তই ভাল, ঠাণ্ডা হইলে খারাপ হইয়া যায়! মাজিস্ট্রেট সাহেবেরও ইচ্ছা তখনই বিচার আরম্ভ হয়,–কিন্তু তিনি ন্যায় অন্যায় জ্ঞান-বিবজিত ছিলেন না। ছটীতে উকিল-মোক্তার বাড়ী গিয়াছে, এই ছটীর সময় মকদ্দমার বিচার করিলে আসামীর প্রতি নিতান্ত অন্যায় হইবে জানিয়া বিচার তিন দিনের জন্য মুলতুবি রাখিলেন। আসামীকে জামিনে ছাড়িয়া দিবার জন্য একজন ক্ষুদ্রকায় ক্ষীণজীবী মোক্তার দরখাস্ত করিলেন,—তক করিলেন যে প্রমাণ লিপিবদ্ধ হইবার পাবে আসামীকে হাজতে দেওয়া আইন ও হাইকোটের মতের বিরদ্ধে। সাহেব তীব্রস্বরে জিজ্ঞাসা করিলেন,-কি ? খনি-মকদ্দমার আসামীর জামিন প্রার্থনা ? তোমার স্বদেশীয় সম্প্রান্ত লোককে হত্যা করা হইয়াছে, সেই মকদ্দমায় আসামীকে উচিত দণ্ডবিধানের জন্য মকদ্দমা হইতেছে, আর তুমি তারিণীবাবরে বন্ধ, —তুমি তারিণীবাবরে স্বদেশীয় লোক,—তুমি সেই তারিণীবাবরে হত্যা-মকদ্দমার আসামীকে রক্ষা করিতে চেন্টা করিতেছ ? তাহার জামিন প্রার্থনা করিতেছ? অামি বিস্মিত হইলাম । সাহেবের ভাবগতিক দেখিয়া ক্ষুদ্রকায় মোক্তার মহাশয় চারিদিকে সরষে ফল দেখিলেন,—আর অধিক বাক্যব্যয় না করিয়া, বাম হস্তে শামলা ধরিয়া সেলাম ঠাকিয়া চম্পট দিলেন। ছটীর কয়েকদিন অতিবাহিত হইল। দারোগা মহাশয় বড়ই চিন্তায় সে কয়দিন কাটাইলেন, পাছে সাক্ষীদিগকে কেহ হাত করে, পাছে তালপুকুর হইতে কোনও লোক সাক্ষীদের সহিত দেখা করে, পাছে রমাপ্রসাদের দেবতুল্য চরিত্র ও নিন্দোষতা আলোচনা করিয়া সাক্ষীদিগের মন আপনা হইতে ফিরিয়া যায়! ছোট ডিঙ্গিতে চড়িয়া জাল ফেলিয়া জেলেভায়া যখন বড় বড় কাতলা মাছ ধরেন-কাতলা মাছ যখন ধড়ফড় করিতে থাকে, জালই ছেড়ে কি ডিঙ্গিই ডোবে,— তখন জেলেভায়া যেরপে উৎসকে হয়েন, দারোগা মহাশয় আজ সেইরাপ উদ্বিগ্ন ! যে কাতলা মাছ তাঁহার জালে পড়িয়াছে, ইহা নিরাপদে ডিঙ্গিতে তুলিতে পারিলে তাঁহার লাভের শেষ নাই, বোধ হয় দুই এক মাসের মধ্যে পদ ও বেতন বদ্ধি হইবে। কিন্তু এ বিষম কাতলা! জটাধারীকে কেহ চেনে না, উহাকে সন্দিন্ধ লোক বলিয়া প্রমাণ করা বড় কঠিন নহে, দারোগা মহাশয় এইরুপ মনে করিয়াছিলেন, কিন্তু মকদ্দমা হইয়া অবধি সরস্বতী ঠাকুরের যশ আরও চারিদিকে বিকীর্ণ হইতে লাগিল। দারোগা বাবরে ডিঙ্গি বুঝি ডোবে! ۹۹ عنصیت