বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৫২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्लट्मथ ब्रष्5नावली तिरण गिब्रट्झन : भर्साबबाश् আমাদের ইতিহাস শেষ হইল। আমরা তালপুকুর গ্রামের সপ্তবিংশ বৎসরের ইতিহাসসমাপ্ত করিলাম। দরিদ্রের কন্যা, দরিদ্রের গহিণী, শান্তহৃদয়া বিন্দবাসিনী আমাদের নায়িকা। বিন্দকে আমরা হইতে দেখিয়াছি-বিন্দরে নবম বৎসর বয়সের সময় তাহার মাতার সহিত একদিন সন্ধ্যাবেলা তালপুকুরের ঘাটে সে কন্যাটীকে দেখিয়াছিলাম;—বিন্দর অন্টাদশ বৎসর বয়সের সময় কলিকাতার তাঁহার বিধবা ভগিনীর বিবাহের নিমন্ত্রণে আমরা গিয়াছিলাম;—এখন বিন্দর সপ্তবিংশ বৎসর বয়স, তাহার কন্যা সশীলার বিবাহে আমাদের নিমন্ত্রণ হইয়াছে ! সাধাহাসিনীও দরিদ্র-কন্যা, অকালে বিধবা! আধুনিক শিক্ষাকে আমরা নিন্দা করি, কিন্তু আধুনিক শিক্ষাবলেই সন্ধা চির হতভাগিনীর অবস্থা হইতে উদ্ধার পাইয়া উন্নতচেতা হৃদয়েশ্বর লাভ করিয়াছে। সন্ধা চিরকালই প্রফুল্লচিত্তা, প্রফল্পেনয়না ও একটা রসিকা, কিন্তু তালপুকুর গ্রামে তাহার অপেক্ষা প্রকৃত সদগুণবতী, দয়াদ্র হদয়া, পরোপকারিণী কেহ ছিল না—জগৎসংসারে তাহার অপেক্ষা পতিপ্রাণা, পতিপরায়ণা কেহ নাই। ধনপুরের ধনবতী বধ উমাতারার অকাল মৃত্যুতে আমরা আশ্রজেল বিসঙ্গজন করিয়াছি, - অভাগিনী কালীতারার অকাল বৈধব্যে আমরা আক্ষেপ করিয়াছি । হেমচন্দ্র ও শরতের সহিত কলিকাতায় যাইয়া আমরা অনেক বড়লোকের পরিচয় পাইয়াছি, উকিঝুকি মারিয়া বড়মানুষদের বৈঠকখানা এক আধবার দেখিয়া জীবন সাথক করিয়াছি। দেবীপ্রসন্নবাবরে বিপলে সংসারে প্রবেশ করিয়া তাঁহার গরীবণী গহিণীর সহিত সভয়ে দুই চারিটা কথা কহিয়া আপ্যায়িত হইয়াছি। ধনঞ্জয়বাবরে মামারপ্রাসাদ এবং সাদা জড়ি ও কালো জড়ি দেখিয়াছি, তাঁহার হৃদয়ের মিত্র ও মিত্রাণীদিগকে দেখিয়াছি, তাঁহার উন্নতি ও তাঁহার অকালে অবনতিও দেখিলাম। সচতুর বৃদ্ধিমান সন্মতিবাবরে ক্রমশঃ উন্নতি দেখিয়াছি, তিনি কবে “রায় বাহাদরে” উপাধি পাইবেন, श्रेश घाइो ब्राइसौँछ। কলিকাতার বড়বাজার দেখিয়াছি, তথায় যশ, মান ও পাণ্ডিত্য বিক্রয় হয়, এবং সাধার বিবাহের সময় কলিকাতার অনেক আযf্যসস্তান ও সর্বশাসন্ত্ৰবিং পণ্ডিতদের পরিচয় পাইয়া জীবন পবিত্র করিয়াছি ! সনাতনবাটীতে অজ্ঞাত সন্ন্যাসীর শাস্ত্রকথা শুনিতে গিয়া প্রসিদ্ধ জমিদার-বংশের কিছর পরিচয় পাইলাম, এবং সম্প্রান্ত জমিদার কামিনীকান্তবাবর দশন লাভ করিলাম। সেই বিপলে বংশের নবীনা ও প্রাচীনাদিগের সহিত কখন কখন পুকুরঘাটে দেখা হইয়াছে, ভয়ে ভয়ে এই ইতিহাসে তাঁহাদের দুই একটী কথা লিখিয়াছি, যদি অপরাধ হইয়া থাকে, নবীনা ও প্রাচীনাগণ ক্ষমা করিবেন। * তালপুকুরের “ঠাকুরমা” ও “দাদামহাশয়ের” নিকট অনেক গভীর পরামর্শ পাইয়া আমাদের সমাজের বৃদ্ধিমতী ও বৃদ্ধিমানগণ উপকৃত হইয়াছেন, এবং সংসারে যথেস্ট “আদায়” করিতে না, তাঁহার মৃত্যুতে আমরা বড়ই বিপদে পড়িয়া কলিকাতা ও বদ্ধমান পৰ্য্যন্ত হাঁটাহাটি করিয়াছি। বদ্ধ মানে যাইয়া পদ্মসরোবরের ন্যায় তথাকার উকিলমন্ডলীর দশন পাইয়াছি, এবং উকিঝ:কি মারিয়া হাকিমদিগের এজলাস ও খাসকামরা দেখিয়া আসিয়াছি। সংসার ও সমাজ দোষ ও গণে গঠিত—যেরপে দেখিয়াছি, সেইরাপ বৰ্ণনা করিবার চেণ্টা পাইয়াছি। সমাজে দোষ অনেক আছে, কিন্তু আমি দোষ অপেক্ষা সদগণেই অধিক দেখি, সতরাং আমাদের ভবিষ্যতের উন্নতির আশা রাখি। যে সমাজে রমণীকাস্তের ন্যায় জমিদার ন্যায় রাজকর্মচারী আছেন, সে সমাজের উন্নতির পথ অবরুদ্ধ হইবে না। যোগমায়া, বিন্দবাসিনী ও সাধাহাসিনীর ন্যায় পতিপ্রাণা নারী আমাদের বঙ্গদেশের ঘরে ঘরে বাস করেন—বঙ্গসংসার আজিও বঙ্গনারীদিগের পণ্যবলে উক্তজবল। এবং হেমচন্দ্র একদিন আহার সমাপন করিয়া আমাদের কাণে কাণে বলিলেন,–বঙ্গদেশের রন্ধনশালাও অদ্য পৰ্য্যন্ত বঙ্গনারীদিগের রন্ধননৈপুণ্যবলে উজ্জল । 8సి0