পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

し熱 . % আসিও । बक्रविट्छज्रा క్గాణా করিলেন,—কোথায় ঘাইবেন,-আমার আলয়ে কি আপনাকে আহবান করিতে ל মহাশ্বেতা উত্তর করিলেন,—মহেশ্বর-মন্দিরের মোহান্ত চন্দ্রশেখরের নিকট পনবার যাইব । ইন্দ্রনাথ কিঞ্চিৎ ক্ষম হইলেন, কোন উত্তর করিলেন না। তৎক্ষণাৎ গ্রাম পরিত্যাগ করিবার উদ্যোগে গমন করিলেন। মহাশ্বেতা সরলাকে নিদ্রা হইতে তুলিয়া সবিশেষ বলিলেন। সরলার বালিকা-মখমণ্ডল গম্ভীর হইল। রুদ্রপরে গ্রামে ছয় বৎসর কাল থাকিয়া সকল দ্রব্যে মায়া হইয়াছিল। সেই পরিপাটী কুটীর, সেই উদ্যান, সেই সবহস্তরোপিত পাপচারা, সকলই ত্যাগ করিতে হইবে। প্রাতঃকালে উঠিয়া আর রন্দ্রপরের পক্ষীদিগের সুললিত গান শনিতে পাইবে না, দই প্রহরে সেই আমবক্ষের নিস্তন্ধ স্নিগ্ধ ছায়াতে উপবেশন করিয়া আর কায্য করা হইবে না, সন্ধ্যায় অমলার সেই সমধর হাস্যবিকসিত মুখ আর দেখিতে পাইবে না। অমলার কথা স্মরণ হওয়াতে চক্ষতে জল আসিল, বলিল,— মা, আমি সইয়ের নিকট বিদায় লইয়া আসি। মহাশ্বেতা বলিলেন,—যাও মা, কিন্তু শীঘ্র সরলা বিদায় লইতে চলিল। অমলার গৃহের নিকট যাইয়া ডাকিল, “সই!” প্রফুল্লবদনা অমলা গহের বাহিরে আসিল। কি তামাসা করিবে বলিয়া তাহার অধরোঠে হাসি দেখা দিতেছে; কিন্তু সরলার মুখপানে চাহিয়া আমলার প্রফুল্লমুখ গম্ভীর হইল; অধরের হাসি শুকাইয়া গেল। দেখিল, সরলার নয়নযুগল জলে ছল ছল করিতেছে, টস টস করিয়া বক্ষঃস্থলে জল পড়িতেছে। অমলা নিকটে আসিয়া স্নেহভরে হস্তধারণ করিয়া জিজ্ঞাসা করিল,—কি সই, কি হইয়াছে ? সরলা উত্তর করিল,-মা বলিয়াছেন, আমরা এই গ্রাম হইতে অদ্যই চলিয়া যাইব, তোমার সঙ্গে বোধ হয়, এই শেষ দেখা,—এই বলিয়া সরলা অমলার বক্ষঃস্থলে আপন মখে লুকাইয়া দুরবিগলিত ধারায় রোদন করিতে লাগিল। দ্বিপ্রহর রাত্রিতে সহসা এই কথা শুনিয়া অমলার হৃদয়ে যেন বজ্রপাত হইল। প্রথমে সে কথা বিশ্বাস করিতে পারিল না, কিন্তু সরলার অবস্থা দেখিয়া সন্দেহেরও স্থল থাকিল না। তখন অমলা আশ্রবেগ সম্বরণ করিতে পারিল না, চক্ষুজলে সরলার কেশ সিক্ত করিল। অনেকক্ষণ পর কম্পেট চিত্তসংযম করিয়া অমলা বলিতে লাগিল,—সেকি সই ? আমার সঙ্গে আবার শেষ দেখা ? তুমি যেখানে থাকিবে, আমি সেইখানে যাইয়া তোমার সহিত দেখা করিব। এক্ষণে এ স্থান হইতে তোমরা কেন যাইবে, বল দেখি ? সরলা কিঞ্চিৎ শান্ত হইয়া বলিল,—তাহা আমি জানিনা ; মা তাহা বলেন নাই; কিন্তু আমরা ইচ্ছামতী-তীরে মহেশ্বর-মন্দিরে যাইতেছি । অমলা বলিল,—তা মহেশ্বর-মন্দির আর রন্দ্রপরে ত এপাড়া ওপাড়া, প্রত্যহ যাইয়া তোমায় দেখিয়া আসিব । তার জন্য আবার ভাবনা কিসের ? ক্ষণেক পর অমলা বলিল,—দাঁড়াও সই, আমি শীঘ্রই আসিতেছি—বলিয়া গৃহমধ্যে প্রবেশ করিল। শীঘ্ৰ বাহিরে আসিয়া সরলার কাপড়ের অঞ্চলে কি বধিয়া দিল। সরলা জিজ্ঞাসা করিল,—কি দিলে সই ? অমলা উত্তর করিল,—ও কিছু নহে, পথে ক্ষুধা পাইবে, সেই জন্য কিছয় মুড়ি আর ফটকড়াই অচিলে বধিয়া দিতেছি। আমার মাথা খাও, ফেলিয়া দিও না। এই বলিয়া কাপড়ে ১০টী রৌপ্যমুদ্রা বধিয়া দিল। বিদায়ের সময় অমলা সইয়ের হাত ধরিয়া বলিল-সই, কিছ ভাবিও না, আমি মহেশ্বরমন্দিরে শীঘ্ৰ তোমার সহিত দেখা করিতে যাইব । আর পাছে ইহার মধ্যে আমাকে ভুলিয়া যাও, সেই জন্য আমার একটী চিহ্ন তোমার গায়ে রাখিয়া দি । এই বলিয়া আপন গলদেশ হইতে সোণার চিক লইয়া সরলার গলায় পরাইয়া দিতে গেল। সরলা বাধা দিবার চেষ্টা করিল, তাহাতে অমলা বলিল,—যদি না লও, তবে আমি জানিব, আমাকে ভুলিয়া গিয়াছ;—যদি আমাকে কখন ফিরাইয়া দিতে চাহ, তবে জানিব, আমাকে ভুলিয়া গিয়াছ। সরলা নিরত্তের হইল। অমলা তাহাকে সেই চিক পরাইয়া দিল এবং অশ্রুপণেলোচনে প্রিয় সইকে বিদায় দিল। এদিকে ইন্দ্রনাথ নৌকা ঠিক করিলেন। মহাশ্বেতা, সরলা ও ইন্দ্রনাথ সেই নৌকায় আরোহণ St;