বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 е রাজা প্রজা । কোনো শক্তিমানের কানে একথা বলিলে তাহার ভয় পাইবার কারণ নাই ; কেন না, শুধু কথায় সে ভুলিবে না। বস্তুতই তাহার স্বাৰ্থ কড়ায় গণ্ডায় সপ্রমাণ হওয়া চাই। অর্থাৎ সে স্থলে তাহাকে দলে টানিতে গেলে নিজের স্বার্থও যথেষ্ট পরিমাণে বিসর্জন না দিলে তাহার মন পাওয়া যাইবে না । অতএব, সেখানে অনেক মধু ঢালিতে হয়, অনেক তেল খরচ না করিয়া চলে না । ইংলণ্ডের উপনিবেশগুলি তাহার দৃষ্টান্ত । ইংরেজ ক্রমাগতই তাহাদের কানে মন্ত্র আওড়াইতেছে “যদেতৎহৃদয়ং মম তদস্থ হৃদয়ং তব,” কিন্তু তাহার শুধু মন্ত্রে ভুলিবার নয়—পণের টাকা গণিয়া দেখিতেছে। হতভাগ্য আমাদের বেলায় মন্ত্রেরও কোনো প্রয়োজন নাই, পণের কড়ি ত দূরে থাক্। আমাদের বেলায় বিচাৰ্য্য এই যে, বিদেশীয়ের সহিত ভেদবুদ্ধি জাতীয়তার পক্ষে আবশুক কিন্তু ইম্পরিয়ালিজমের পক্ষে প্রতিকূল ; অতএব সেই ভেদবুদ্ধির যে সকল কারণ আছে, সেগুলাকে উৎপাটন করা কৰ্ত্তব্য : কিন্তু সেটা করিতে গেলে দেশের ভিন্ন ভিন্ন অংশের মধ্যে যে একটা ঐক্য জমিয়া উঠিতেছে, সেটাকে কোনোমতে জমিতে না দেওয়াই শ্রেয় । সে যদি থও খও চূর্ণ চুর্ণ অবস্থাতেই থাকে, তবে তাহাকে আত্মসাৎ করা সহজ । ভারতবর্ষের মত এত বড় দেশকে এক করিয়া তোলার মধ্যে একটা গৌরব আছে । ইহাকে চেষ্টা করিয়া বিচ্ছিন্ন রাখা ইংরেজের মত অভিমানী জাতির পক্ষে লজ্জার কথা । কিন্তু ইম্পরিয়ালিজম মন্ত্রে এই লজ্জা দূর হয় । ব্রিটিশ এম্পায়ারের মধ্যে এক হইয়া যাওয়াই ভারতবর্ষের পক্ষে যখন পরমার্থলাভ, তখন সেই মহছদেণ্ডে ইহাকে জাতায় পিষিয়া বিশ্লিষ্ট করাই “হিয়ুম্যানিটি ” ভারতবর্ষের কোন স্থানে তাহার স্বাধীন শক্তিকে সঞ্চিত হইতে ন্য