ষোড়শী। সত্যি বই কি ভাই।
ভৃত্য। মা, মেঘ যে বেড়েই আসচে?
হৈম। এই যে উঠি বাবা। অনেক বাচালতা করে গেলাম দিদি, মাপ করো।
নির্ম্মল। হৈমকে যে চিঠিখানা লিখেছিলেন, তার হাতে দিলে সময়ও বাঁচত, খরচও বাঁচত।
ষোড়শী। (হাসিয়া) না দিলেও বাঁচবে। হয়ত আর তার প্রয়োজনই হবে না।
নির্ম্মল। ঈশ্বর করুন নাই যেন হয়, কিন্তু হলে আপনার প্রবাসী ভক্ত দু’টিকে বিস্মৃত হবেন না।
হৈম। আসি দিদি। (পদধূলি লইয়া উঠিয়া দাড়াইল) তোমার মুখের পানে চেয়ে আজ কত-কি যেন মনে হচ্চে। দিদি! মনে হচ্ছে, এমন যেন তোমাকে আর কখনো দেখিনি—যেন সহসা কোথায় কত দূরেই চলে গিয়েছো।
নির্ম্মল। নমস্কার। প্রয়োজনে যেন ডাক পাই।
ষোড়শী। হৈম, তুমি যেন আজ আমার কত যুগের চোখের ঠুলি খুলে দিয়ে গেলে বোন।—কে?
সাগর। আমি সাগর।
ষোড়শী। তোদের আর সবাই? কাল যারা দল বেঁধে এসেছিল?
সাগর। আজও তারা তেমনি দল বেঁধেই গেছে হুজুরের কাছারিবাড়িতে। আর বোধ হয় তোমারই বিরুদ্ধে-
ষোড়শী। বলিস কি সাগর? আমারই বিরুদ্ধে?
সাগর। আশ্চর্য্য হবার ত কিছু নেই মা! সর্বপ্রকার আপদে বিপদে চিরকাল তোমার কাছে এসে দাড়ানই সকলের অভ্যাস। প্রথমটা সেই অভ্যাসটাই বোধ হয়। তারা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু আজ জমিদারের একটা চোখ-রাঙানিতেই তাদের হুস হয়েছে।
ষোড়শী। ভালো। কিন্তু সভাটা যে শুনেছিলাম মন্দিরে হবার কথা ছিল?
সাগর। কথাও ছিল, হুজুরের ভোজপুরীগুলোর ইচ্ছেও ছিল, কিন্তু গ্রামের কেউ রাজি হলেন না। তাঁরা ত এদিককার মানুষ—আমাদের খুড়ো-ভাইপোকে হয়ত চেনেন।
ষোড়শী। কি স্থির হ’লো সভাতে?