বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শিশু-ভারতী - চতুর্থ খণ্ড.djvu/২৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Al - ------------- - উপাদান কি কি, তা তোমাদিগকে উপরে জানিয়েছি বাকী রইল ষে ক্ষিতি মণ্ডল আর জল-মণ্ডল, তালাই হচ্ছে ভূ তত্ত্বের প্রধান আলোচ্য বিধয়। এই যে পুথিবীর চার ভাগ, এটা হল কি করে ? ভাগ ক ওয়া ত কেউ চাপে দেখে নাই। তবে এটা ধরে নেওয়া হয় যে পরীতির যে সমস্ত নিয়ম আমরা আঞ্জ জানি, সে নিয়মগুলো চিরস্তন, আর সেক্ট নিয়ম অনুসারেই ভূমণ্ডল জলে স্থলে আকাশে ভাগ হয়ে গেছে । আগেই তোমাদিগকে বলেছি যে, পৃথিবীর ইতিহাস আলোচনা করার জন্ত কল্পনা শক্তির যথেষ্ট প্রয়োজন। তবে ভূতুড়ে কাণ্ড ত আর কিছু ঘটে নেই । তাই কল্পনা শক্তিটা এলোমেলো হলে চলবে না, সংযত ও কারণ-সঙ্গত হওয়া চাই । ভূমণ্ডলের জন্ম হল তপ্ত গনগনে বাম্পের মূৰ্ত্তিতে । এই ধাম্পের মধ্যে বিরানব্বইট মৌলিক পদার্থ সবাই ছিল, তবে আলাদা আলাদা হয়ে । তার পর ঘূর্ণিপাক আরম্ভ হল। প্রকৃতির সাধারণ নিয়মে সেন্স উত্তপ্ত জড়পিণ্ডের রাশি ধীরে ধীরে জুড়িয়ে যেতে লাগল। যখন তার তরল ঢলঢ়লে অবস্থা চল, তখন ভারী পদার্থগুলো (লোহা, নিকেল ইত্যাদি ধাতু ) নীচে পড়ল, গাদলা সব উপরে ভেসে উঠল। ক্রমশ: সেই গাদলা জমে জমে পুরু আর শক্ত হতে থাকল। আর নানা রকম মৌলিক গ্যাস-যেমন হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ফোস ফাস করে বাইরে বেরোতে লাগল। হাইড্রোজেন অক্সিজেনে মিলে হল জল। নাইট্রোজেন অক্সিজেন উপরে উঠে গিয়ে তৈরী করলে বায়ুমণ্ডল। জল থেকে কি আর তখনই সাত সমুদ্র তের নদী হল, তা নয়। প্রথম জল ত সেই তপ্ত গাদলার উপর পড়বা মাত্র বাষ্প হয়ে ৰায়, মণ্ডলে চলে গেল । সেখানে ঠাণ্ডা হয়ে আবার রাষ্টরূপে পৃথিবীতে পড়ল। আবার বাম্প হয়ে আকাশে উঠল। আবার পড়ল। এই রকম কত হাজার বছর জলে স্থলে খেলা চলল। তার ফলে পৃথিবীর উপরট এবড়ো-ধেবড়ে উচু নীচু চিত্রবিচিত্র হয়ে যেতে লাগল। - --- শিশু-ভগৱতী Ֆ8Հե এই আদিম যুগের বিষয় আসল ভূতত্ত্ব কিছু বলতে পারে না। এ সব ব্যাপার পণ্ডিতরা অন্য নানা বিস্কার সাহায্যে, কল্পনার বলে, দেখতে পেয়েছেন। যে তপ্ত গাদলার কথা উপরে বলেছি, তারই উপর সব পড়ে পড়ে আজকের এই ক্ষিতি-মণ্ডল তৈরী হয়েছে। কিন্তু তাই বলে পৃথিবীটা যে আজ পেয়াজের মতন একটার উপর একটা পর্দাদিয়ে গঠিত, তা নয়। কোথাও বা উপরের স্তবট আদিম যুগের, কোথাও বা মধ্য যুগের কোথাও বা অপেক্ষাকৃত আধুনিক। পরের সংখ্যায় একটা চিত্র (Diagram) দিব। তোমরা সেটা খুব ভাল করে দেখো। বুঝতে চেষ্ট) কোরো, কি ভাবে পরের স্তরগুলো আগের স্তরগুলোকে ঢাকা দিয়েছে । নাম মুখস্থ করার কোন দরকার নেই। এই স্তরগুলো সম্বন্ধে অনেক কথা এর আগেই তোমরা শিশুভারতীতে পড়েছ। অামার যেটুকু বক্তব্য, অস্তে আস্তে পরে বলব। তোমরা হয় ত জানতে চাইপে, ভূ-তত্ত্ব বিঙ্গ প্রাচীন না আধুনিক। বিষ্ঠাটা অতি আধুনিক । প্রাচীনের ভূ-তত্ত্বেপ বিঘং বিশেষ কিছু জানিতেন না। পাশ্চাত্য এশিয়াল পৌরাণিক কাহিনীতে ত ক্রম-বিবর্তনের কোন কথাই নেই ! স্বষ্টিকৰ্ত্তার হুকুমে মানুষ জন্তু গাছ-পাল সুদ্ধ পুথিবী একদিন অকস্মাৎ এসে উপস্থিত হল! প্রাচ্য এশিয়ার পুরাণে কিন্তু অন্ত কপী আছে। এটা বেশ পরিষ্কার লেখা আছে যে, পুথিবী স্বল্প ওvার অনেক পরে মানুষের আবির্ভাব হল। বিষ্ণু-অবতারের কথা ভাব না ! যখন যে রকম আবেষ্টন, বিষ্ণু সেই অনুযায়ী দেহ পরিগ্রহ করে পৃথিবীতে এসেছিলেন —জলের যুগে মৎস্ত, পাকের যুগে কুৰ্ম্ম, ডাঙ্গার যুগে বরাহ, জঙ্গলের যুগে নৃসিংহ, আদিম মানবের যুগে বামন । এ সব পৌরাণিক গল্প মাত্র, তোমাদিগকে বিশ্বাস করতে বলছি না। তবে এই গল্প থেকে মনে হয় যে, এদেশে অন্তত: প্রাচীনর জানিতেন যে পুথিবী অতীতকালে নানা মুষ্টি ধারণ করেছে এবং ধীরে ধীরে অনেক যুগের পর মাছুষের বাসের উপযোগী হয়েছে।