ব্যবসাটা ধরা হ’ল কেন? এ চাকরী ত তোমাদের মত মানুষ দিয়ে হয় না। যাও, চট্পট্ স’রে পড়।
ক্রোধে সর্ব্বাঙ্গ জ্বলিয়া গেল; কিন্তু প্রকাশ পাইতে দিলাম না। সহজভাবে বলিলাম, চাকরী যতদিন হয়, ততদিনই ভাল। ব’সে না থাকি বেগার খাটি—জান ত? আচ্ছা, এখন উঠি। বাইরের লোক হয় ত বা কিছু মনে ক’রে বস্বে।
পিয়ারী কহিল, কর্লে সে ত তোমার সৌভাগ্য ঠাকুর! এ কি আর একটা আপ্শোষের কথা?
উত্তর না দিয়া যখন আমি দ্বারের কাছে আসিয়া পড়িয়াছি, তখন সে অকস্মাৎ হাসির লহর তুলিয়া বলিয়া উঠিল, কিন্তু দেখো ভাই, আমার সেই চোখের জলের গল্পটা যেন ভুলে যেয়ো না। বন্ধু-মহলে, কুমারসাহেবের দরবারে প্রকাশ কর্লে—চাই কি তোমার নসিবটাই হয় ত ফিরে যেতে পারে।
আমি নিরুত্তরে বাহির হইয়া পড়িলাম। কিন্তু এই নির্লজ্জার হাসি এবং কদর্য্য পরিহাস আমার সর্ব্বাঙ্গ ব্যাপিয়া যেন বিছার কামড়ের মত জ্বলিতে লাগিল।
স্বস্থানে আসিয়া এক পেয়ালা চা খাইয়া চুরুট ধরাইয়া মাথা যথাসম্ভব ঠাণ্ডা করিয়া ভাবিতে লাগিলাম—কে এ? আমার পাঁচবছর বয়সের ঘটনা পর্য্যন্ত আমি স্পষ্ট মনে করিতে পারি। কিন্তু অতীতের মধ্যে যতদূর দৃষ্টি যায়, ততদূর পর্য্যন্ত তন্ন তন্ন করিয়া দেখিলাম, কোথাও এই পিয়ারীকে খুঁজিয়া পাইলাম না। অথচ এ আমাকে বেশ চিনে। পিসিমার কথা পর্য্যন্ত জানে। আমি যে দরিদ্র, ইহাও তাহার অবিদিত নহে। সুতরাং আর কোন অভিসন্ধি থাকিতেই পারে না। অথচ যেমন করিয়া পারে, আমাকে সে এখান হইতে তাড়াইতে চায়। কিসের