পাতা:সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রকৃত বন্ধুতা
৮৭

প্রিয়নাথের হৃদ‍্পদ্মে একটি বাণী সমুখিত হইল, “কর্ম্মত্যাগে কখনও প্রাণের অপূর্ণতা দূর হইবে না। ভক্তিতেই মুক্তি। জ্ঞান, ভক্তি, কর্ম্মের মিলনই প্রকৃত শাস্তির পথ। ভক্তি ভিন্ন কর্ম্মত্যাগে কোন ফল নাই।”

 প্রাণের মধ্যে এ বাণী লোকে বলে বিবেক, প্রিয়নাথ বুঝিলেন, ইহা ঈশ্বরের বাক্য।

 তিনি ভাবিতে লাগিবেন,—“এখন স্পষ্টই বুঝিতে পারিলাম, এই প্রকার কর্ম্মত্যাগ স্বার্থপরতারই নামান্তর মাত্র। বিশেষতঃ অমরেন্দ্রকে ত্যাগ করিয়া যাইতে আমি কোনমতেই সমর্থ হইব না। অমরেন্দ্র গেলে প্রফুল্ল কি বাঁচিবে? সাধের গৃহ গঠিত করিতে যাইয়া নিজেই কি তাহাতে অগ্নিসংযোগ করিব? কে যেন আজ সূর্য্যাস্তের পর আমাকে জানাইয়া গেল, এই যে প্রেম ও আনন্দের মূর্ত্তি অমরেন্দ্ররূপে আমার বক্ষস্থলে রহিয়াছে তাঁহাকে ত্যাগ করিলে, আমার সমস্ত সাধনাই ব্যর্থ হইবে।”

 তখন প্রিয়নাথ অমরেন্দ্রকে বাহুপাশে আবদ্ধ করিয়া কহিলেন, —“ভাই, চিরদিন যে আমি তোমারই।[১]



  1. লেখিকার ‘অমরেন্দ্র’ নামক উপন্যাস হইতে।