বাণিজ্যের তরণী সাজাইতে আরম্ভ করিলেন;—ভিতরে গোলা বারুদ,উপরে ধানের বস্তা, তাহার উপর ‘চড়ন্দার’ চল্লিশ জন সুশিক্ষিত সৈনিকপুরুষ,— এইরূপ সুকৌশলপূর্ণ ‘সপ্তডিঙ্গা মধুকোষ’ ইংরাজ সওদাগরের বাণিজ্যভাণ্ডার বহন করিয়া মুরশিদাবাদাভিমুখে ছুটিয়া চলিল। কাশিমবাজারে যাহা কিছু ধনরত্ন সঞ্চিত থাকে, তাহা অবিলম্বে কলিকাতায় পাঠাইবার জন্য ওয়ট্স্কে গোপনে পত্র লিখিতেও ত্রুটি হইল না![১]
অতঃপর সেনাপতি ওয়াট্সন্ যে পত্র লিখিলেন, তাহাই তাঁহার শেষ পত্র; তাহাতে স্পষ্টাক্ষরে লিখিত হইল:—“একজনমাত্র ফরাসী জীবিত থাকিতেও ইংরাজ নিবৃত্ত হইবেন না। তাঁহারা শীঘ্রই কাশিমবাজারে সেনা পাঠাইতেছেন, কাশিমবাজার সুরক্ষিত হইলে, ফরাসিদিগকে বাঁধিয়া আনিবার জন্য পাটনা অঞ্চলে আরও দুই সহস্র ফৌজ প্রেরিত হইবে;—এ সকল কার্য্যে নবাবকে ইংরাজের সহায়তা করিতে হইবে।” এই পত্রে আত্মচরিত্রের গৌরব বৃদ্ধির জন্য ওয়াট্সন্ ইহাও লিখিলেন যে,—“কেবল শান্তির জন্যই তাঁহার যাহা কিছু ব্যাকুলতা, ধনাকাঙ্ক্ষা তাঁহার হৃদয়ে স্থানলাভ করিতে পারে না, তিনি তাহা সর্বান্তঃকরণে ঘৃণা করেন!!”[২] সিরাজদ্দৌলা বুঝিলেন যে, আবার যুদ্ধ বাধিল; তিনিও সাধ্যমত আত্মরক্ষার আয়োজনে প্রবৃত্ত হইলেন।