শ্রীযুক্ত গোলাম হোসেন সলেমী মালদহের লোক, তাঁহার কথাই অধিকতর বিশ্বাস্য। কিন্তু দানশা বা তাঁহার বংশধরদিগের সহিত ইহার কোনরূপ সংস্রব ছিল বলিয়া বোধ হয় না। একমাত্র হণ্টার সাহেব লিখিয়া গিয়াছেন যে, “দানশা সিরাজদ্দৌলাকে ধরাইয়া দিয়া মীরজাফরের নিকট হইতে বহুমূল্য জায়গীর লাভ করিয়া স্বদেশে “সুভামার” খ্যাতিলাভ করেন; তাঁহার বংশধরগণ অদ্যাদি সেই জায়গীর উপভোগ করিতেছেন।”[১] এ কথা সত্য হইলে মালদহের কালেক্টরীতে এই জায়গীরের সন্ধান পাওয়া যাইত। কিন্তু তথায় এরূপ জায়গীরের আদৌ কোন উল্লেখ নাই, মালদহের ভূতপূর্ব্ব কালেক্টর শ্রীযুক্ত উমেশ চন্দ্র বটব্যাল মহাশয় “সেরেস্তা তদন্ত করিয়াও তাহার সন্ধান পান নাই।”[২] দানশার অধিকারে অনেক নিষ্করভূমি থাকার কথা শুনিতে পাওয়া যায়, তাঁহার সমাধিবিদ্যুত পুরাতন ইষ্টকসজ্জা দেখিয়া তাহাকে সম্পন্ন ব্যক্তি বলিয়াই বোধ হয়। কিন্তু তাঁহার বংশধরদিগের অধিকারে এখন অল্প কয়েক বিঘা মাত্র নিষ্কর ভূমি রহিয়াছে, তাঁহারা বলেন যে, তাঁহারা ঐ সকল নিষ্কর ভূমি গৌড়াধিপতি হোসেন শাহ নামক পাঠান বাদশাহের নিকট দানপ্রাপ্ত হইয়া দানশার পূর্বপুরুষের সময় হইতে উপভোগ করিয়া আসিতেছেন।
মিরকাশিম যখন সিরাজদ্দৌলাকে কারারুদ্ধ করেন, সিরাজ তখন নিরস্ত্র নিঃসঙ্গ; তিনি অনন্যোপায় হইয়া অর্থ বিনিময়ে স্বাধীনতা ক্রয় করিবার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াও কৃতকার্য্য হইতে পারিলেন না। মীরকাশিমের সেনাদল লুণ্ঠনলোভে উন্মত্তবৎ তাঁহার নৌকা আক্রমণ করিল,