পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Oba দিদিমা’র দুই চক্ষু অচলাদে জলে ভরিয়! আসিল । হাসি কিন্তু রাগ করিয়া বলিল, “কি যে করিস, ভাট, তুই ! ফের সুদি ও কথা বলবি ত কথা বন্ধ-চির জন্মের আড়ি ।” বলিয়া হাসিয়া ফেলিল । বৈকালে বাড়ী যাইবার সময় জ্যোতিৰ্ম্ময়ী হাসিকে সঙ্গে লইলেন । মোটরে চড়িয়া ছাপি বলিল, —“অণুভদি গিয়ে পর্য্যস্ত হ্রদে আর বেড়ান ইয় নি, আজ জলকে যাবি, ভাই ?” “বেশ ত, লাবাকে সঙ্গে লেব এখন । তোর শরদাঁ বা অনাদিদ কেউ ত এখানে নেই, বাবাকেই হালে বসানো যাবে ।” হাসি মাথা নাড়িয়া বলিল,—“না ভীষ্ট, আমি আর কাউকে চাষ্টনে, আমরা থাকব নেীকার উপর শুধু দু’জনে তোমাতে ও আমাতে—” জ্যোতিৰ্ম্ময়ী সকৌতুকে বলিলেন,--“আমি ত ভাঙ্গ, হাল ধরতে জানিনে, তোর নেয়ে হ'তে পারব न' ङि (* “তরী না হয় অকুলেই ভাসবে ; আমি তোকেই 5हे । श्रांमि न श्ब्र शश १ब्रव. छूहे कॅफ़ि फेोनिन, তা ত পারবি ?”

  • আচ্ছা, বেশ । মাতৃ-আজ্ঞা লঙ্ঘন করতে নেই, রাজি আছি,—”

হাসি মুখ ভাণা করির বলিল,--“আবীর ঐ কথা ! তবে আমি নৌকায় চড়ব না—”

  • সে ভাল কথা ! অামার ভয় হচ্ছিল, পাছে কাচ দাড়ির হাতে তরীখান উলেট গিয়ে তোর অমন সুন্দর কাপড়থানীয় রংটা বেরং ক’রে তোলে ?” র্তাহীদের বাক্য-মীমাংস শেষ হইতে না হইতে মোটরখানা গাড়ী বারানায় ঢুকিল, পণ্ডিত মহাশয় আগে হইতেই রাজকন্সার অপেক্ষায় সেখানে আসিয়া দাড়াইয়াছিলেন। নামিতে না নামিতে র্তাহাকে গ্রেপ্তার করিয়া তিনি কহিলেন,—"ম, একটা কথা আছে ।”

রাজকন্ত। হস্তমুখে বলিলেন,—“কালকের জন্ত কথাটা রেখে দিলে চলে না, পণ্ডিত মশায় ?”

  • না, বড় জরুরি কথা, বেশী সময় নেব না । ঐ গাছতলাটায় একবার এসে যদি দাড়াও, মা—”

রাজকুমারী হাসিকে কহিলেন,–“হাসি, তা হ’লে, ভাই, তুমি উপরে গিয়ে ব’স –আমি পণ্ডিত মহাশয়ের কথাটা শুনে নিই।” হাসি বলিল,—“তোমরা কথা ক’য়ে নেও না, আমি ততক্ষণ বাগানেই একটু বেড়াই ।” ভাগ্যের নিৰ্ব্বন্ধ, এই সময় রাজাবাহাদুর স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী এইখানে আসিয়া দাড়াইলেন।—কন্ত অনুরোধবাক্যে কহিলেন,—“বাবা, হাসি কিন্নর হ্রদে বেড়াতে চান, তুমি নিয়ে যাও না, বাবা ! পণ্ডিত মশায়ের কি কথা আছে, শুনে আমিও এখনি আসছি " রাজা বলিলেন,—“বেশ ত ! এস হাসি, তোমাকে নৌকায় বেড়িয়ে আনি ৷” হাসি আর তখন কোন আপত্তির কথা খুজিয়া পাইল না । ষোড়শ পরিচ্ছেদ সুখের তরঙ্গ উঠিতেছিল—ত্ত্বদের জলে এবং রাজার মনে—সম্ভবতঃ হাসিরও মনে–কিন্তু স্নান হাসির মধ্যে সে তাহী প্রচ্ছন্ন রাখিয়াiছল । শীতকালের অপরাহ্ল ; স্বৰ্য্যদেব অস্তপারে লুকাইয়া অপ্রকাশুভাবে গিদিগন্তে তাহার অঙ্গচ্ছটা বিকীর্ণ করিতেছেন—আর প্রকাগু দিব্যরূপে গগনঅঙ্গন শোভিত করিয়া বণ্ঠীর শশিকলা রবির কনককিরণে মধুরতর সান্ধ্য-মহিম ঢালিয়া দিয়াছে। দ্বাড়ে আহত হ্ৰদ-বারির উচ্ছ্বাসগীতি তালে তালে উজ্জ্বল লহরীতে নাচিয়া নাচিয়া বাস্তব জগতে ধে কুহক স্বপ্রভাব রচনা করিতেছিল,নীর-সম্ভব। মোহিনীমূৰ্ত্তিরূপ হাসি, কর্ণধারবেশে তরীমূলে বসিয়া সেই স্বপ্নভাব বাস্তবে পরিণভ করিয়া তুলিয়াছিল। অগ্রহায়ণ মাস—কিন্তু হাসির সাজসজ্জায় বাসস্ত্রীর শোভা । তাহার রেশমী সাড়ী পীতবর্ণ, জ্যাকেট নীল এবং মাথায় পাতলা শালের ধানী রঙ্গের ক্ষুদ্র ওড়না । মোটরে চলিবার সময় বায়ুর দৌরাত্ম্য হইতে কপালের চুলগুলাকে রক্ষা করিবার অভিপ্রায়ে ওড়নাখানা মাথার উপর হইতে জিপসি ফ্যাসানে গলা বেড়িয়া পিঠের দিকে বাধা । কিন্তু এত সতর্কতা সত্ত্বেও বায়ুচুম্বিত চূর্ণকুন্তলরাশি ওড়নাস্বলিত হইয়। মাঝে মাঝে তাহার মুখের উপর আসিয়া পড়িতেছিল । হাসি এক হাভে হাল ধরিয়া রাখিয়া সচকিতভাষে মুখ তুলিয়া অন্য হাতে সেই বিদ্রোহী চুলগুলাকে পুনরায় ওড়ন-বন্ধ করিতেছিল। কি মুন্দর তাহার গ্রীবাভঙ্গী ! এমনই শোভাতেই বুঝি বিশ্বের রূপকমল একদিন মৃণালবৃত্তে ফুটিয়া উঠিয়াছিল । রাজা কবি-পুরুষ, মানসকমলের সেই চিত্ৰশোভা দেখিতে দেখিতে তাহার মোহমুগ্ধ মনে প্রশ্ন উঠিল—না জানি কাহার অদৃষ্টপরিচালনার