বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©Ꮼ "কেন হে ভায়া ! মন ভাল হবারই ত কথা ! এমন অtশাতাত সহজ ভাবে হাতিয়ারগুলোর উদ্ধারের পথ থোলোস হয়ে এল !” “যা বল ভাই, আমাদের মত ল্যাজধরা জগত বিধাতার স্বষ্টিতে আর কুত্ৰাপি মেলে না । বুদ্ধির মাথা একেবারেই খেয়ে ব’সে আমরা দেশোদ্ধারে মেতেছি। ইচ্ছ। আমাদের একস্ত প্রবল যে, আমরা স্বর্গে চড়ি । যুরোপীয় কেউ হ’লে ইচ্ছামাত্র এঞ্জেলের পাখনাস্থষ্টির আয়োজনে উঠে পড়ে সে লাগতে । কিন্তু অণমর গাজায় দম ক’ষে egমানের ল্যাজটাকেই সেই উদ্দেশ্যে সবে মিলে হাংড়াচ্ছি।” “আমরা যে বুদ্ধিমান জাত, এতে ক’রে তারি পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। বোঝ না হে! কষ্ট নেই, শ্রম নেই, ল্যাজটা ধ’রেই উড়ে চলবে, কতটা সুবিধা বল দেখি ?" “তেত্রিশ কোটি হাতের টানে হনুমান মশায়ের ল্যাঙ্কটি অচিরে ছিড়ে ধায় যদি ?” “বল কি হে ? ত্রেতাযুগে হনুমানজী গন্ধমাদন ল্যাজে উঠিয়েছিলেন। আর এ যুগের ক্ষীণজীবী লোকগুলার ভারে গবর্ণমেণ্টের তর্জনটাও যে নোয় না। গুরু গরুড় আর তাদের বইতে পাবেন না ? না পারেন, মৃত্যুতেই আমাদের স্বৰ্গপ্রাপ্তি।” “নিশ্চয়ই না। পতনে আমরা প্রেতত্ত্বই লাভ কৰূব । না ভাই রঙ্গস্ত নয় —আমরা দেশকে অধীনতা মুক্ত কতে গিয়ে নিজেদেয় বুদ্ধি, চিন্তা, ধৰ্ম্মজ্ঞান সমস্তই কি শোচনীর ভাবে পরাধীন ক’রে ফেলছি! এমন কিছু পাপ নেই, নিষ্ঠুরতা নেই, দেশের নামে গুরুর আদেশে, আমরা করতে কুষ্ঠিত। মনের এই দাসত্ত্বের চেয়ে ইংরাজের দাসত্বও আমি ভাল মনে করি । দীনেশের কথা শুনে অামার মন থেকে আশার আলোক নিবে গেছে—” “আরে গুরু চাই বই কি – সেনাপতি না হ’লে কি যুদ্ধ চলে ? এ ধে ৰুদ্ধের কাল ; এ সময় ব্যক্তিগত বুদ্ধি-বিবেককে এক জনের অনুগত ক’রে না চললে ত হয় না।” “স্বাধীন বুদ্ধি-চিন্তাকেই আমরা যদি মেরে ফেলি, তবে গুরু নিৰ্ব্বাচনই বা করব কি ক’রে ? ক্ষমতার লোভ বা বাহবার লোভ বা স্বার্থসিদ্ধির লোও ধীদের আছে, তারা ত গুরু হ’তে পারেন না। এই ভণ্ডামীর আশ্রয়ে অপূৰ্ণবুদ্ধি নিঃস্বার্থ বালকের প্রতিদিন পাপ-মত্ততার মধ্যে সৰ্ব্বস্ব জলাঞ্জলি দিচ্ছে ! এ ভয়ানক কষ্ট !" আপাততঃ আমাদের স্বর্ণকুমারী দেবীর'গ্রন্থাবলী “হবে, হবে, ভাল গুরুর অভুদ্যয় হবে—এ শুধু আরম্ভের কাল । অত নিরাশ হবার কারণ নেই। সেনাপতিকে নিয়ে এস । পরশু পর্য্যস্ত আমাদের অপেক্ষা করতেই হবে। তুমি তাকে আনতে কালই যাওঁ ! এ দিকে দীনেশের সঙ্গে আমি বোঝাপড়া ক'রে ফেলি।” “যে অজ্ঞে, তাই হবে । কিন্তু একটা কথা বলি ভাই, আমার মনে বড় অগ্নতাপ হচ্ছে।” "কেন ?" "রাজকুমারীর সহিত দলপতিটার দেখা করিয়ে দিলুম কেন ?” - “গভস্ত শোচনা নাস্তি ।* “অাছে বই কি ? ডাক্তণরদাকে দেখ ওরা কি রকম প্যাচে ফেলার চেষ্টার আছে । হার মেনে শেষে যদি রাজকন্যার প্রতি শুভদৃষ্টি দেয় ? বড় ভাবনা ধরিয়ে দিয়েছে ।” কিছু ভাবনা নেই, এখন শাস্ত্র ডাক্তণরদাকে এনে ফেলো ।” দ্বাবিংশ পরিচ্ছেদ কলিকাতায় ফিরিয়া আসিয়া রাজা ও শরৎকুমারকে অনাদি প্রায় সব কথাই বলিল ; বলিল না কেবল ইতিপূৰ্ব্বে তাহারা যে সেই দলে একবার মিশিতে গিয়াছিল, সেই কথা । এই ঘটনা-সংশ্লিষ্ট বিবরণ যতটুকু, তাহাই মাত্র অপ্রকাশ রাখিল । রাজা তাহাদের মতলব শুনিয়া হাসিয়া বলিলেন, “cēt Hitq; adventurous spirit sffr Hafts চাইনে ; তবে চোর-ডাকাতের অস্তানায় যাচ্ছ— বিশেয সাবধানে চ’লো, ফাদ এড়িয়ে পা ফেলো।– একটুও বিপদের সম্ভাবনা বুঝলে পিছু হঠতে সঙ্কোচ ক’রে না ; একান্ত বাধ্য না হ’লে দুঃসাহসী হ’তে ষেয়ে না, এই আমার উপদেশ।” অনাদি প্রফুল্লভাবে উত্তর করিল—“আঞ্জে আপনি নিশ্চিন্ত থাকৃতে পারেন, বসন্দা খুব জাদরেল বুদ্ধির লোক।” রাজা হাসিলেন, হাসিয়া বলিলেন,—“তোমার বসন্দা খুব পাকা জেনারেল হ’তে পারে—কিন্তু আমার নির্ভর ডাক্তারের বুদ্ধির উপরেই বেশী। ভগবান তোমাদের নিরাপদ করুন, এই আমার প্রার্থনা ও আশীৰ্ব্বাদ ।” শুভ রণযাত্রায় রাজার অমুজালাভে অনাদি