পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মিলন-রাত্রি পুলিসকৃপাতেই ডাকাতের হাত হইতে তাহারা রক্ষণ পাইয়াছে । পুলিসই তাহাদের রক্ষণ করিয়াছিল- শুনিয়া সাহেব আশ্চৰ্য্য হইলেন—জিজ্ঞাসা করিলেন, “কোথাকার পুলিস ? কোতোয়ালির—না থানার ?” এই দুই পুলিসের পার্থক্য ধনপতির লোকজনের মাথায় প্রবেশ করিল না,—দরোরান বলিল, ”হা হা হুজুর—কোতোয়ালিবষ্ট থান ঠিক—বড়। হু [সম্বর দারোগী—ও লোক ” সরকার বলিল, “হুঙ্কর ত পুলিসেরই সাহেব ! তারাও নিশ্চয়ই"আপনারই তালেদার-বড় বঁচোন পাচিয়েছে—হজুর ” পুলিস্সাহেব আর কিছু না বলিয়া গাড়ী ফিরাষ্টয়া লইয়া বিজনের সহিত পুনরায় জঙ্গলে বিদ্রোহীর আদদা দেখিতে চলিলেন । পরদিন পুলিসসাহেবের সন্দেহভঞ্জন চইল । ধনপতির ধন্যবাদপত্রে মিশ্চয়রূপে তিনি জানিলেন যে, সশরীরে উপস্থিত ন! থাকিয়াও তিনিই ভাগকে ধনে-প্ৰাণে রক্ষা কবিয়াছেন । কেবল তাঁহাই নহে, দুই এক দিনের মধ্যে নানা থববের কাগজে প্রসাদপুর পুলিসের গৌরবকাহিনী বল বর্ণে রঞ্জিত হইয়া প্রচলিত হইল। ইহার ফলেষ্ট যে অচিরাং সাহেবের পদোন্নতি হইয়াছিল--—সে বিষয়েও কাহার ৪ সন্দেস্থ করিবার কারণ দেখি না । সড়বিংশ পরিচ্ছেদ ডাকাতদলের সহিত পৃলিসের মারামারী, পুলিস“সাহেব” দেথিয় যান নাই। তিনি তৎপূৰ্ব্বেই গাড়ীর শঞ্চ লক্ষ্য করিয়া বিজনের সহিত অণমুমানিক ডাকাতদলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করিলেন ; আর এ দিকে শিকল ছিড়িল—দারোগ৷ সাহেবের ভাগ্যে । ডাকাতদল এই পথে আসিয়া পড়ায় তাছায় সহিত যুদ্ধ বাধিল । ফলে কি হইল, পাঠক জানেন । ডাকাতরা তাঙ্গর দল-বলকে হারাইয়া দিয়া স্বচ্ছন্দে পলাইয়া গেল - মাঝে হইতে ধরা পড়িলেন শরৎকুমার। দারোগ। অতঃপর প্রধানতঃ অহিত কন্‌ষ্টেবলদিগের শুশ্ৰুষার জন্যই সদলে থানায় প্রত্যাবৰ্ত্তন করিলেন । কি জানি, পুলিসকৰ্ত্ত যদি এইখানে ফিরিয়াই আসেন, তাহাকে সমস্ত বার্তা জানাইবার জন্ত দুই জন কন্‌ষ্টেবলকে মাত্র এগানে হাজির রাখিয়া হুকুম দিয়া গেলেন—৭টা বেলা ৬৭ পর্যন্ত পুলিসসাহেবের জন্ত অপেক্ষা করিয়া তাহার পর তাহারা যেন থানায় ফিরিঙ্গ যায় । থানায় ফিরিয়া পথমেই তিনি আছতগণকে হাসপাতালে আনিয়া ফেলিয়া শরৎকুমারের ডাক্তারী বিদ্যাট কাজে লাগাইয়া লইলেন । এমন দক্ষতার সঙ্গিত বন্দী ডাক্তার তাহাদিগের ক্ষতস্তানে অস্ত্রসঞ্চালন পুৰ্ব্বক ছিটাগুলী বাহির করিয লইয়া বাধনছাদন ঠিক করিয়া দিলেন যে, তাহার অস্ত্রনৈপুণ্যে সকলেই প্রশংস|মুগ্ধ হইয়া গেল। দারোগী মহাশয় সম্প্রতি প্রসাদপুরে বদলিপদে আসিয়াছেন ; স্বতরাং তিনি শরৎকুমারকে ইতিপূৰ্ব্বে দেখেন নাই ; কিন্তু গুণসপাতালের ডাক্তার তাহাকে চিনিতেন । হইলে কি হয় । বিদ্রোহিত অপম্বাধে তিনি এখন অভিযুক্ত—বাস্ রে! তাতার সহিত পরিচয়ের কথা কি এখন মুখে মানিতে আছে । কিন্তু তিনি যাহা চাপা দিলেন—এক জন কম্পাউণ্ডার সে কৰা প্রকাশ করিয়া বসিল । ইহার পর কনফেসন পৰ্ব্ব । বন্দীর মুখ হইতে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য দারোগ বাহান্থর রীতিমত ছলকৌশলময় সাপুড়ে মন্ত্রে তাহাকে প্রলুব্ধ করিতে চেষ্টা করিলেন। মন্ত্র কিন্তু নিষ্ফল হইল, সাপ ভূলিল না, -খেলিল না—সাপুড়ের বগুত৷ মানিল না । সৰ্ব্ব প্রশ্নের তাগিদে তাহার একমাত্র উত্তর— “আমি নিরপরাধ ; এ সম্বন্ধে আমার বক্তব্য যাহা, তাহ ম্যাজিষ্ট্রেটকেই বলিব—” বন্দী ডাক্তার লোক, অধিকন্তু তাহার ধরণধারণে, বাকো এমনতর একটা অভিজাত-শ্রেষ্ঠত আত্মপ্রকাশ করিতেছিল যে, দারেগা মহাশয় কাৰ্য্যোদ্ধার-সকল্পেও তাঙ্গর প্রতি পীড়নপর হইতে সাহস না পাইয়া, অপরাহ্লে ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট র্তাহীকে লইয়া গেলেন । ম্যাজিষ্ট্রেট মিঃ মনরো তখন এ্যাসিষ্টেণ্ট মিঃ রের সহিত বাগানে বসিয়া চা-পান করিতেছিলেন । মিসেস মনরো এখন বিলাতে। বিদেহ-সংক্রান্ত ঘটনার পুৰ্ব্বে স্বামীও তাই বিলাত যাইবার মানসে প্রিভিলেজ লিবের জন্য দরখাস্ত করেন । সম্প্রতি র্তাহার সে দরখাস্ত মঞ্জুর হইয়া আসিয়াছে এবং রো সাহেব তৎপদে বদলি নিযুক্ত হইয়াছেন। যখন ইচ্ছা এখন মনরো পাড়ী মারিতে পারেন। কিন্তু তৎপুৰ্ব্বে বিদ্রোহসংক্রান্ত মোকদ্দমাটা শেষ করিয়া যাইবারই তাহার ইচ্ছা । তবে কি জানি, তাহt যদি ন-ই পারেন, অন্ততঃ এ্যাসিষ্টাণ্টকে র্তাহার