চন্দ্রাপীড়ের দেহত্যাগ আশার কি অপরিসীম মহিমা! চন্দ্রাপীড় অচ্ছেদতীরে বন্ধুকে দেখিতে না পাইয়া ভাবিলেন, একবার মহাশ্বেতার আশ্রম দেখিয়া আসি। বোধ হয়, মহাশ্বেতা সন্ধান বলিতে পারেন। এই স্থির করিয়া ইন্দ্রায়ুধে আরোহণপূর্বক তথায় চলিলেন। কতিপয় পরিচারক ও সঙ্গে সঙ্গে গেল। আসিবার সময় মনোরথ করিয়াছিলেন মহাশ্বেতা আমার গমনে সাতিশয় সন্তুষ্ট হইবেন এবং আমিও আহিলাদিত চিত্তে র্তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিব। কিন্তু বিধাতার কি চাতুরী! ভবিতব্যতার কি প্রভাব! মনুষ্যেরা কি অন্ধ এবং তাহাদিগের মনোরথ কি অলীক। চন্দ্রাপীড় বন্ধুর বিয়োগে দুঃখিত হইয়া অনুসন্ধানের নিমিত্ত যাহার নিকট গমন করিলেন, দূর হইতে দেখিলেন, তিনি শিলাতলে উপবিষ্ট হইয়া অধোমুখে রোদন করিতেছেন। তরলিকা বিষগ্ন বদনে ও দুঃখিত মনে তঁহাকে ধরিয়া আছে। মহাশ্বেতার তাদৃশ্য অবস্থা দেখিয়া চন্দ্রপীড় যৎপরোনাস্তি ভীত হইলেন। ভাবিলেন, বুঝি কাদম্বরীর কোন অত্যহিত ঘাঁটিয়া থাকিবেক। নতুবা পত্রলেখার মুখে আমার আগমনবার্ত্তা শুনিয়াছেন, এ সময় অবশ্য হৃষ্টচিত্ত থাকিতেন। চন্দ্রাপীড়ি বৈশম্পায়নের অনুসন্ধান না পাওয়াতে উদ্বিগ্ন ছিলেন, তাহাতে, আবার প্রিয়তমার অমঙ্গলচিন্তা মনোমধ্যে প্রবেশ করাতে নিতান্ত, কাতর হইলেন। শূন্য হৃদয়ে মহাশ্বেতার নিকটবর্তী হইয়া শিলাতলের এক পার্থে বসিলেন ও তরলিকাকে মহাশ্বেতার শোকের হেতু,