জীবনের শেষ কয়েক দিবসের কথা। 279 মাত্র জল পান করিয়া গঙ্গাতীরে প্রয়োপবেশনে অবস্থিতি করিতেছেন আপনি পরীক্ষিত, সংসাররূপ তক্ষকের দ্বারা দষ্ট এবং বিষ্ণুরাত অর্থাৎ বিষ্ণু কর্তৃক রক্ষিত, আসুন আমি আপনাকে বাসুদেব বর্ম্মে আচ্ছাদন করি। এই বলিয়া সেই পুণ্য বিধৌত দেহ যষ্টির উপর ‘ওঁ নমোভগবতে বাসুদেবায়’ মন্ত্র পাঠ করিয়া দুই তিনবার আপাদমস্তক আবৃত করিলাম। সঙ্গে সঙ্গে তাহার দেহের বাহ ব্যাপার তিরোহিত হইয়া ভাব সমাধি উপস্থিত হইল।—তখন আর কোথায় যন্ত্রণা আর কোথায় বা প্রলেপ। ডাক্তার বাবু ঔষধি লইয়া ফিরিয়া আসিলেন। প্রলেপ পড়িয়া রহিল এবং অবস্থা দেখিয়া সকলে এককালে বিস্মিত হইলেন। একবার মাত্র অৰ্দ্ধনিমীলিত চক্ষু গৃহস্থিত সকলের প্রতি স্থাপন করিয়া সকলকে গৃহত্যাগ করিয়া বাহিরে যাইতে বলিলেন এবং আমাকেও বলিলেন ‘আপনি আপনার নিত্যাক্রিয়া করুন গে৷ ” এই ব্যাপারে। তঁহার পৌত্র শ্রীমান শ্রীশচন্দ্র আমাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন—“পিতামহ আপনাকে অত্যন্ত ভক্তি করিতেন তবে কি কারণ আপনাকেও সরাইয়া দিলেন,’ উত্তরে বলিলাম। তিনি মানস ব্যাপারে এমন স্থানে উপনীত হইয়াছেন যে সেখানে গুরু শিষ্যে দেখা ঘটে না। বাহ্যজ্ঞান প্রকাশ না পাইলেও মুখে পুনঃ পুনঃ বলিতে লাগিলেন “আমি জীবন অনুসন্ধান করিতেছি- জীবনই সর্বস্ব-জীবনই তিনি এই কি জীবন! আহা কি সুন্দর! কি মধুর। এই কি সেই উত্তাপহীন আলোক! আহা—কি সুন্দর কি মধুর। ইতি পুর্বে আমাকে ধ্যানের বিষয় একবার জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, তাহাতে বলিয়াছিলাম-হৃৎপদ্মকোষের কণিকামধ্যে ইড়া, পিঙ্গলা ও সুষুমার মিলনস্থানে, চন্দ্র, সুর্য্য ও অগ্নির মিশ্রণে উত্তাপহীন আলোক জ্যোতির মধ্যে আত্মদেবের ধ্যান করিতে হয়। তাহতেই বোধ হয় উত্তাপহীন