জীবন স্মৃতি। ዓ @ অদ্বৈতবাদ প্রভৃতি বিষয় লইয়া কাশীমবাজার রাজবাটীতে পণ্ডিতবৃন্দের ঘন ঘন শিখা সঞ্চালিত হইতেছে, এমন সময়ে রাজীবলোচন হঠাৎ এমন এক মনীষা-ব্যঞ্জক মন্তব্য প্রকাশ করিতেন, যাহাতে পণ্ডিত মণ্ডলী চমৎকৃত হইতেন। তঁহার সমক্ষে কেহ কোনও কর্ম্মচারীকে উৎকোচগ্রাহী সাব্যস্ত করিয়া তাহার স্থলে অপরের নিয়োগের কথা বলিলে, রাজীবলোচন বলিতেন,-“আচ্ছা যে সর্ষে দিয়ে ভূত ছাড়াবো, যদি সেই সর্ষেতে ভূত থাকে।” অমনি পরিচর্চার ভনভনানি মন্দীভূত হইত। মহারাণী স্বর্ণময়ী প্রতিবৎসর পৌষ মাসে ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতদিগকে শীত বস্ত্রাদি দান করিতেন। এই বিতরণের ভার দেওয়ান লাইতেন বলিয়া, তঁাহার নিকট অসংখ্য সুপারিস পত্র আসিত। বন্ধুবান্ধবের নিকট বলা ছিল যেন প্রত্যেকে দুই খানির অধিক সুপারিস পত্র না দেন। পত্র লইয়া ব্রাহ্মণ পণ্ডিত উপস্থিত হইলেই, তিনি নাম, ধাম, কোথায় কাহার বাসায় আছেন প্রভৃতি অনেক কথা জিজ্ঞাসা করিতেন। যদি কেহ বলিত, ঐ পত্রেই সব কথা খোলসা করিয়া লেখা আছে, তিনি আমনই বলিলেন বুড়ো মানুষকে আবার চশমা। পরাবার কষ্ট দেবেন। এই প্রকার জেরা করিয়া তিনি জ্ঞাতব্য অনেক কথা আদায় করিতেন, চশমা লইতে কষ্ট হওয়ার কথা চালাকি মাত্র। একবার সার গুরুদাস একজন সামান্য গোছের পণ্ডিতকে চিঠি দিয়াছেন। সুতরাং আর এক জনকে আর একখানা সুপারিস চিঠি দেওয়া যাইতে পারে, এমন সময়ে মতিবাবু আসিয়া বলিলেন, আমি দুইখানা চিঠিই দেবার পরে একজন খুব বড় পণ্ডিত এসে ধরেচেন, তাহার সম্বন্ধে আপনি দেওয়ানকে অনুরোধ করুন। সার গুরুদাস তখন ব্যস্ত ছিলেন বলিয়া, মতিবাবুর মুহুরি ঐ পত্রখানি লিখিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের সহি করাইয়া লন। সার গুরুদাসের