মনসামঙ্গল-বিজয় গুপ্ত—খৃঃ ১৫শ শতাব্দী। বিজয় গুপ্তের নিবাস পূর্ব্ববঙ্গের বাখরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত ফুলত্র গ্রাম। ১৪৯৪ খৃষ্টাব্দে সম্রাট হুসেন সাহের সময় ইহার মনস-মঙ্গল কাব্য শেষ হয়। সম্ভবতঃ ১৪৭৮ খৃষ্টাব্দে উহার আরম্ভ। বিশেষ বিবরণ বঙ্গভাষা ও সাহিত্যের ১৮৯–১৯৩ পৃষ্ঠায় দ্রষ্টব্য। খেয়া-নৌকার কত্রী ডোমিনী কর্তৃক চণ্ডীকে শিবের সন্ধান দান। ডোমনী বলে সর্থী তোমার স্বামী নহে দেখি জানিয়া জিজ্ঞাস কি কারণে। লাখে লাখে লোক যায় পার হৈয়া খেয়া-নায় হুড়াহুড়ি কেবা কারে চিনে॥ সরযুর ঘাট যুড়ি খেয়া দিতে আইলাম বুড়ী আজু বড় দেখিলাম কৌতুক। এক বুড়া হইল পার তিনটী নয়ন তার দেখিতে সুন্দর পঞ্চমুখ॥ কপালে চাদের ফোট৷ আকাশে পরশে জট বাম কন্ধে লোহার ত্রিশূল। বলদে চড়িয়া যায় শিঙ্গা ডস্তুর বঁায় দুই কর্ণে ধুতুরার ফুল। গলায় হাড়ের মালা পিন্ধন বাঘের ছাল সকল শরীর ভষ্মময়। হৃদয়ে ফোপায় ফণী তার শিরে জলে মণি তাহারে দেখিতে করে ভয়॥ তপস্বীর বেশে চলে নয়নে অনল জলে লম্বা লম্বী করে গোপ-দাড়ি। দন্ত ভ্রুকুটি করে নবগুণ (১) তুলিয়া ধরে পার হৈয়া না দেয় খেয়ার কড়ি॥ ডোম-নারী যত কয় চণ্ডিকার মনে লয় মনে ভাবে ঐ মোর স্বামী। বলে সখি ভাল কহ আজু তুমি ঘরে রহ নাও লয়্যা খেয়া দিব আমি ৷ চণ্ডীরে রাখিয়া নায় ডোম-নারী ঘরে যায় সানন্দে বিজয় গুপ্ত গায়॥ (১) নবগুণ = নগুণ = উপবীত। R8 >b-Q