খ্রঃ ১৫শ শতাব্দী। বধু আগে কোলে আস তোরে কোলে করি। আমার মনের যত দুঃখ সকল পাসরি॥ পুত্রের বার্তা পাইয়া চাদর বড় রঙ্গ। দোলা ঘোড়া এড়িয়া (১) চাদ দিল উভী লড়। আথে ব্যথে (২) যায় চাদ করিয়া লড়ালড়ি। বাম কান্ধে লইয়া চাদ হেতলের বাড়ি॥ সোণেকার পাছে ধাইল ছয় বধূ রাণ্ডী। বায়ুবেগে ধায় যেন ধনুকের গাওঁ ৷ শুনিয়া দেশের লোক হইল কৌতুক। এককালে ধাইয়া আল্য ডিঙ্গার সম্মুখ॥ মনসা-মঙ্গল—দ্বিজ বংশীবদন দ্বিজ বংশীবদনের মনসা-মঙ্গল। বংশীবদনের নিবাস ময়মনসিংহের অন্তর্গত কিশোরগঞ্জ থানার অধীন পাতওয়াড়ী গ্রাম। ১৫৭৫ খৃষ্টাব্দে ইনি মনসামঙ্গল কাব্য রচনা করেন (৩)। ইনি সংস্কৃত ভাষায় স্থপণ্ডিত ছিলেন। বাঙ্গালা মনসামঙ্গল ছাড়া ইনি রামগীতা, চণ্ডী এবং কৃষ্ণগুণার্ণব নামক তিনখানি বৃহৎ গ্রন্থ ও রচনা করেন। ইহার রচিত মনসামঙ্গল হাইকোর্টের উকীল ঐযুক্ত দ্বারকানাথ চক্রবর্ত্ত মহাশয় সম্প্রতি প্রকাশ করিয়াছেন। দ্বিজ বংশী যে সময়ের লোক, তাহা স্মরণ করিলে তাহার রচনা যে প্রাচীন-কাব্য-সমুহের মধ্যে বিশেষ আদরণীয় ও বিশুদ্ধ তাহ নিঃসন্দেহে বলা যাইতে পারে। ইহার সম্বন্ধে অপরাপর জ্ঞাতব্য বিষয় প্রকাশিত মনসামঙ্গলের ভূমিকায় দ্রষ্টব্য। দক্ষের শিব-নিন্দ ও যজ্ঞ-শাল হইতে দধীচির প্রস্থান। দক্ষ বলে শিবকে ন কৈলু নিমন্ত্রণ। জাতিহীন জানি তাকে বলে সর্ব্ব জন॥ চারি জাতি মধ্যে শিব নহে এক জাতি। আচার বিচার নাহি নাম পশুপতি॥ (১) ত্যাগ করিয়া। (২) আস্তে ব্যস্তে = তাড়াতাড়ি। (৩) “জলধির বামেত ভুবন মাঝে দ্বার। শকে বচে দ্বিজ বংশী পুরাণ পদ্মার ৷ ” অর্থাৎ ১৪৯৭ শক = ১৫৭৫ *: